পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলম্বোয়ু স্বাঙ্গীর বক্তৃতা * সম্বন্ধে কিছু জালো কি ? সে আপনার প্রশ্নে বিস্মিত হইয়া বলিবে, এটা আবার কি ? সোণ্ডালিজম্ প্রভৃতি সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, পরিশ্রম ও মূলধনের সম্পর্ক এবং এইরূপ অন্যান্য কথা সে জীবনে কখনও শোনে নাই। সে কঠোর পরিশ্রম করিয়া জীবিকা অর্জন করে,—রাজনীতি বা সমাজনীতির সে এইটুকুমাত্র বুঝে । কিন্তু তাহাকে যদি জিজ্ঞাস কর, তোমার ধর্ম কি ? সে নিজের কপালেব তিলক দেখাইয়া বলিবে, আমি এই সম্প্রদায়ভুক্ত। ধর্মবিযয়ে প্রশ্ন করিলে তাহার মুখ হইতে এমন দু-একটি কথা বাহির হইবে, যাহাতে আমরাও উপকৃত হইতে পারি। নিজ অভিজ্ঞত হইতে আমি ইহা বলিতেছি । তাই পৰ্মই অমাদৈর জাতীয় জীবনের ভিত্তি। প্রত্যেক ব্যক্তির একটা না একটা বিশেষত্ব আছে, প্রত্যেক ব্যক্তিই বিভিন্ন পথে উন্নতির দিকে অগ্রসর হয়। আমরা হিন্দু—আমরা বলি, অনন্ত পূর্বজন্মের .কর্মফলে মানুষের জীবন একটি বিশেষ নির্দিষ্ট পথে চলিয়া থাকে ; কারণ অনন্ত অতীতকালের কর্মসমষ্টিই বর্তমান আকারে প্রকাশ পায়; আর আমর, বর্তমানের যেরূপ ব্যবহার করি, তদনুসারেই আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন গঠিত হইয় থাকে । এই কারণেই দেখা যায়, পৃথিবীতে জাত প্রত্যেক ব্যক্তিরই একদিকে না একদিকে বিশেষ ঝোক থাকে ; সেই পথে তাহাকে যেন চলিতেই হইবে ; সেই ভাব অবলম্বন না করিলে সে বঁাচিতে পারিবে না । ব্যক্তি সম্বন্ধে যেমন, ব্যক্তির • সমষ্টি জাতি সম্বন্ধেও ঠিক তাই ! প্রত্যেক জাতির যেন একট। না একটা বিশেষ ঝোক থাকে। প্রত্যেক জাতিরই জীবনের যেন একটি বিশেষ উদেশ্ব থাকে। সমগ্র মানবজাতির জীবনকে সর্বাঙ্গ-সম্পূর্ণ করিবার জন্য প্রত্যেক জাতিকেই যেন একটি বিশেষ ব্রত পালন করিতে হয় । নিজ নিজ জীবনের উদ্দেশ্য কার্যে পরিণত করিয়া প্রত্যেক জাতিকেই সেই সেই ব্রত উদযাপন করিতে হয় । রাজনীতিক বা সামরিক শ্রেষ্ঠত কোন কালে আমাদের জাতীয় জীবনের উদ্দেশ্য নহে-কখন ছিলও না, আর জানিয়া রাখুন, কখন হইবেও না । তবে আমাদের জাতীয় জীবনের অন্য উদ্দেশু আছে। তাহা এই—সমগ্র জাতির আধ্যাত্মিক শক্তি সংহত করিয়া যেন এক বিদ্যুদাধারে রক্ষা করা এবং যখনই স্থযোগ উপস্থিত হয়, তখনই এই সমষ্টীভূত শক্তির বন্যায় সমগ্র পৃথিবী প্লবিত করা । যখনই পারসীক, গ্রীক, রোমক, আরব বা ইংরেজেরা তাহদের অজেয় বাহিনী সহ দিগ্বিজয়ে বহির্গত হইয়। বিভিন্ন জাতিকে একস্থত্রে গ্রথিত করিয়াছে, তখনই