পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯০ স্বামীজীর রাণী ও রচনা কাহারও কাহারও মতে মধ্য-তিব্বত হইতে, আবার কেহ কেহ বলেন মধ্যএশিয়া হইতে । অনেক স্বদেশপ্রেমিক ইংরেজ অাছেন, যাহারা মনে করেন আর্যগণ সকলেই হিরণ্যকেশ ছিলেন । অপরে আবার নিজ নিজ পছন্দ-মত তাহাদিগকে কৃষ্ণকেশ বলিয়া স্থির করেন। লেখকের নিজের চুল কালো হইলে তিনি আর্যগণকে ও কৃষ্ণকেশ করিয়া বসেন । আর্যগণ সুইজরলণ্ডের হ্রদগুলির তীরে বাস করিতেন—সম্প্রতি এরূপ প্রমাণ করিবার চেষ্টা হইয়াছে। তাহারা সকলে মিলিয়। যদি এই-সব মতামতের সঙ্গে সেখানে ডুবিয়া মরিতেন, তাহা হইলে আমি দুঃখিত হইতাম না! আজকাল কেহ কেহ বলেন, আর্যগণ উত্তরমেরুনিবাসী ছিলেন। আর্যগণ ও তাহাদের বাসভূমির উপর ভগবানের আশীৰ্বাদ বর্ষিত,হউক! আমাদের শাস্ত্রে এই-সকল বিষয়ের কোন প্রমাণ আছে কি না যদি অনুসন্ধান করা যায়, তবে দেখিতে পাইবে—আমাদের শাস্ত্রে ইহার সমর্থক কোন বাক্য নাই ; এমন কোন বাক্য নাই, যাহাতে আর্যগণকে ভারতের বাহিরে কোন স্থানের অধিবাসী মনে করা যাইতে পারে ; আর আফগানিস্থান প্রাচীন ভারতের অন্তর্ভূত ছিল । শূদ্ৰজাতি যে সকলেই অনার্য এবং তাহার যে বহুসংখ্যক ছিল, এ-সব কথাও সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সে সময়ে সামান্য কয়েকজন উপনিবেশকারী আর্যের পক্ষে শত সহস্ৰ অনার্যের সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিত; করিয়া বাস করাই অসম্ভব হইত। উহারা পাচ মিনিটে আর্যদের চাটনির মতো খাইয়া ফেলিত । জাতিভেদের একমাত্র যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা মহাভারতেই পাওয়া যায়। মহাভারতে লিখিত আছে : সত্যযুগের প্রারম্ভে একমাত্র ব্রাপত্ৰ জাতি ছিলেন । র্তাহারা বিভিন্ন বৃত্তি অবলম্বন করিয়া ক্রমশ: বিভিন্ন জাতিতে বিভক্ত হইলেন । জাতিভেদ-সমস্তার যত প্রকার ব্যাখ্যা শুনা যায়, তন্মধ্যে ইহই একমাত্র সত্য ও যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা। আগামী সত্যযুগে আবার ব্রাহ্মণেতর সকল জাতিই ব্রাহ্মণে পরিণত হইবেন। স্বতরাং ভারতের জাতিভেদ-সমস্যার মীমাংসা এরূপ দাড়াইতেছে—উচ্চবর্ণগুলিকে হীনতর করিতে হইবে না, ব্রাহ্মণজাতিকে ধ্বংস করিতে হইবে না। ভারতে ব্রাহ্মণই মহুযুত্বের চরম আদর্শ—শঙ্করাচার্য র্তাহার গীতাভাস্যের ভূমিকায় ইহা অতি সুন্দরভাবে প্রকাশ করিয়াছেন। প্রকৃষ্ণের অবতরণের কারণ বলিতে গিয়া তিনি বলিয়াছেন, শ্ৰীকৃষ্ণ ব্রাহ্মণত্ব রক্ষা করিবার জন্ত অবতীর্ণ হইয়াছিলেন ; ইহাই তাকার অবতরণের মহান উদেশ্ব। এই ব্রাহ্মণ, এই দিব্য