পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের ভবিষ্যৎ >窃》 মানব, ব্ৰহ্মজ্ঞ পুরুষ, এই আদর্শ ও পুর্ণমানবকে থাকিতে হইবে ; তাহার লোপ হইলে চলিবে না। আধুনিক জাতিভেদ-প্রথার যতই দোষ থাকুক, আমরা জানি—ব্রাহ্মণজাতির পক্ষে এইটুকু বলিতেই হইবে যে, অন্যান্য জাতি অপেক্ষ তাঁহাদের মধ্যেই অধিকতর সংখ্যায় প্রকৃত ব্রাহ্মণত্ব-সম্পন্ন মানুষের জন্ম হইয়াছে, ইহা সত্য । অন্যান্য জাতির নিকট ব্রাহ্মণদের এ গৌরব প্রাপ্য। যথেষ্ট সাহস অবলম্বন করিয়া আমাদিগকে তাহাদের দোষ দেখাইতে হইবে, কিন্তু যেটুকু প্রশংসা-যেটুকু গৌরব তাহাদের প্রাপ্য, সেটুকু তাহাদিগকে দিতে হইবে। প্রত্যেক ব্যক্তিকেই তাহার ন্যায্য প্রাপ্য দাও”—এই ইংরেজী প্রবাদ-বাক্যটি মনে রাখিও । অতএব বন্ধুগণ, বিভিন্ন জাতির মধ্যে বিবাদের প্রয়োজন নাই । বিবাদে কি ফল হুইবে ? উহা আমাদিগকে আরও বিভক্ত করিবে, দুর্বল করিয়া ফেলিবে, আরও অবনত করিয়া ফেলিবে । একচেটিয়া অধিকারের—একচেটিয়া দাবির দিন চলিয়া গিয়াছে, ভারত হইতে চিরদিনের জন্য চলিয়া গিয়াছে, আর ইহা ভারতে ইংরেজ-শাসনের অন্যতম স্বফল । মুসলমান শাসনকালেও এই একচেটিয়া অধিকার-লোপের যে সুফল ফলিয়াছে, সে-জন্য আমরা ঋণী । তাহাদের রাজত্বে যে সবই মন্দ ছিল, তাহা নহে। জগতের কোন জিনিসই সম্পূর্ণ মন্দও নহে, সম্পূর্ণ ভালও নহে। মুসলমানের ভারতাধিকার দরিদ্র পদদলিতদের উদ্ধারের কারণ হইয়াছিল। এ দারিদ্র্য ও অবহেলার জন্যই সমাদের এক-পঞ্চমাংশ লোক মুসলমান হইয়া গিয়াছে। কেবল তরবারির বলে ইহা সাধিত হয় নাই ৯ কেবল তরবারি ও অগ্নির বলে ইহা সাধিত হইয়াছিল, এ-কথা মনে করা নিতান্ত পাগলামি। . আর তোমরা যদি সাবধান না হও, তবে মাদ্রাজের পঞ্চমাংশ, এমন কি অর্ধেক লোক খ্ৰীষ্টান হইয়া যাইবে । মালাবার দেশে আমি যাহা দেখিয়াছি, তাহা অপেক্ষ অধিক আহাম্মকি জগতে আর কিছু কি থাকিতে পারে ? পারিয়া’ বেচারাকে উচ্চবর্ণের সঙ্গে এক রাস্তায় যাইতে দেওয়া হয় না, কিন্তু যেমুহূর্তে সে খ্ৰীষ্টান হইয়া পুর্বনাম বদলাইয়া একটা ব্যু হোক ইংরেজী নাম লইল বা মুসলমান হইয়া,মুসলমানী নাম লইল, আর কোন গোল নাই, সব ঠিক । এইরূপ দেখিয়া ইহা ছাড়া আর কি সিদ্ধাস্ত করিতে পারা যায় যে, মালাবারবাসীরা সব পাগল, তাহাদের গৃহগুলি এক একটি উন্মাদ আশ্রম, আর যতদিন