পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ૨૨ স্বামীজীর রাণী ও রচনা যতদিন তাহারা নিজেদের প্রথা ও আচারাদির সংশোধন না করিতেছে, ততদিন তাহারা ভারতের প্রত্যেক জাতির ঘৃণার পাত্র হইয়া থাকিবে। এরূপ দুষিত ও পৈশাচিক প্রথাসমূহ যে এখনও অবাধে রাজত্ব করিতেছে, ইহা কি তাহদের ঘোরতর লজ্জার বিষয় নহে ? নিজেদেরই সস্তানগণ অনাহারে মরিতেছেআর যে মুহূর্তে তাহারা অন্য ধর্ম গ্রহণ করে, অমনি তাহারা পেট পুরিয়া থাইতে পায় ! বিভিন্ন জাতির ভিতর দ্বেষ-দ্বন্দ্ব আর থাকা উচিত নয় । উচ্চতর বর্ণকে নীচে নামাইয়া এ সমস্যার মীমাংসা হইবে না, নিম্নজাতিকে উন্নত করিতে হইবে । আর যদিও কতকগুলি লোক-অবশ্য, ইহাদের শাস্ত্রজ্ঞান এবং প্রাচীনদের মহান উদ্বেগু বুঝিবার ক্ষমতা কিছুই নাই—অন্তরূপ বলিয়া থাকেন, তথাপি ইহাই আমাদের শাস্ত্রোপদিষ্ট কার্যপ্রণালী। তাহারা উহ। বুঝিতে পারে না। কিন্তু যাহাদের মস্তিষ্ক আছে, যাহাদের ধারণাশক্তি আছে, তাহারাই ঐ কার্যের ব্যাপক উদেশ্ব বুঝিতে সমর্থ। তাহারা দূরে থাকিয়—যুগ যুগ ধরিয়া জাতীয় জীবনের যে অপুর্ব শোভাযাত্রা চলিয়াছে, তাহার আদি হইতে অস্ত পর্যন্ত আহুধাবন করেন । তাহারা প্রাচীন ও আধুনিক সকল গ্রন্থের মাধ্যমে জাতীয় জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ খুজিয়া বাহির করিতে পারেন । কি সেই কার্যপ্রণালী ? একদিকে ব্রাহ্মণ, অপর দিকে চণ্ডাল ; চণ্ডালকে ক্রমশঃ ব্রাহ্মণত্বে উন্নীত করাই তাহাদের কার্যপ্রণালী । * যেগুলি অপেক্ষাকৃত আধুনিক শাস্ত্র, সেগুলিতে দেখিবে নিম্নতর জাতিদের ক্রমশ: উচ্চাধিকার দেওয়াহইতেছে। এমন শাস্ত্রও অাছে, যাহাতে এইরূপ কঠোর বাক্য বলা হইয়াছে যে, যদি শূদ্র বেদ শ্রবণ করে, তাহার কর্ণে তপ্ত সীসা ঢালিয়া দিতে হইবে, যদি তাহার বেদ কিছু স্মরণ থাকে, তবে তাহাকে কাটিয়া ফেলিতে হইবে। যদি সে ব্রাহ্মণকে ‘ওহে ব্রাহ্মণ' বলিয়া সম্বোধন করে, তবে তাহার জিহব ছেদন করিতে হইবে। ইহা প্রাচীন আক্ষরিক বর্বরতা সন্দেহ নাই, আর ইহা বলাএ বাহুলামাত্র । কিন্তু ইহাতে ব্যবস্থাপকগণের কোন দোষ দেওয়া যায় না, কারণ র্তাহারা সমাজের অংশবিশেষের প্রথাবিশেষ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন মাত্র। এই প্রাচীনদের ভিতর কখন কখন অস্থর-প্রকৃতি লোকের জন্ম হইয়াছিল। সকল যুগে সর্বত্রই অল্পবিস্তর অস্থর-প্রকৃতির লোক বর্তমান ছিল। পরবর্তী স্মৃতিসমূহে আবার দেখিবে, শূদ্রের প্রতি ব্যবস্থার কঠোরতা কিছু কমিয়াছে—পূদ্রগণের