পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

わー স্বামীজীর বাণী ও রচনা ভারতের দর্শন ও অধ্যাত্মবিদ্যা এই-সকল নূতন পথের মধ্য দিয়ু জগতে বিভিন্ন জাতির শিরায় শিরায় প্রবাহিত হইয়াছে। সমগ্র মনুষ্যজাতির উন্নতিকল্পে শাস্তিপ্রিয় হিন্দুরও কিছু দিবার আছে—আধ্যাত্মিক আলোকই পৃথিবীর ক্লাছে ভারতের দান । এইরূপে অতীতের ইতিহাস পাঠ করিা আমরা দেখিতে পাই, যখনই কোন প্রবল দিগ্বিজয়ী জাতি পৃথিবীর বিভিন্ন জাতিকে একসূত্রে গ্রথিত করিয়াছে, ভারতের সহিত অন্যান্য দেশের, অন্যান্য জাতির মিলন ঘটাইয়াছে, নিঃসঙ্গতাপ্রিয় ভারতের নিঃসঙ্গতা তখনই ভাঙিয়াছে ; যখনই এই ব্যাপার ঘটিয়াছে, তখনই তাহার ফলস্বরূপ সমগ্র পৃথিবীতে ভারতের আধ্যাত্মিক তরঙ্গে বন্যা ছুটিয়াছে। বর্তমান (উনবিংশ) শতাব্দীর প্রারস্তে বিখ্যাত জার্মান দার্শনিক শোপেনহাওয়ার , বেদের এক প্রাচীন অতুবাদ হইতে জনৈক ফরাসী যুবক-কুত অস্পষ্ট ল্যাটিন অনুবাদ পাঠ করিয়া বলিয়াছেন, "উপনিষদ ব্যতীত সারা পৃথিবীতে হৃদয়ের: উন্নতিবিধায়ক আর কোন গ্রন্থ নাই । জীবৎকালে উহা আমাকে সাস্তুন দিয়াছে, মৃত্যুকালেও উহাই আমাকে শান্তি দিবে। অতঃপর সেই বিখ্যাত জার্মান দার্শনিক ভবিষ্যদবাণী করিতেছেন, ‘গ্ৰীক সাহিত্যের পুনরভু্যদয়ে চিন্তাপ্রণালীতে যে পরিবর্তন আসিয়াছিল, শীঘ্রই তাহ অপেক্ষ শক্তিশালী ও ব্যাপক পরিবর্তন ; জগং প্রত্যক্ষ করিবে । আজ তাহার ভবিষ্যদ্বাণী সফল হইতেছে। . যাহার। চক্ষু খুলিয়া আছেন, র্যাহারা পাশ্চাত্য জগতের ধিভিন্ন জাতির মনের গতি বুঝেন, র্যাহাবা চিন্তাশীল এবং বিভিন্ন জাতি সম্বন্ধে বিশেষ আলোচনা করেন, তাহার। দেখিবেন, ভারতীয় চিষ্টার এই ধীর অবিরাম প্রবাহের দ্বারা জগতের ভাবগতি, চালচলন ও সাহিত্যের কি গুরুতর পরিবর্তম সাধিত হইয়াছে। তবে ভারতীয় প্রচারের একটি বিশেষত্ব আছে । আমি সেসম্বন্ধে আপনাদিগকে পূর্বেই কিঞ্চিৎ আভাস দিয়াছি । আমরা কখনও বন্দুক ও তরবারির সাহায্যে কোন ভাব প্রচার করি নাই । যদি ইংরেজী ভাষায় কোন শব্দ থাকে, যাহা দ্বারা জগতের নিকট ভারতের দান প্রকাশ করা যাইতে পারে —যদি ইংরেজী ভাষায় এমন কোন শব্দ থাকে, যাহ। দ্বারা মানবজাতির উপর ভারতীয় সাহিত্যের প্রভাব প্রকাশ করা যাইতে পারে, তাহা হইতেছে— fascination (সম্মোহনী শক্তি) । হঠাৎ যাহা মানুষকে মুগ্ধ করে, ইহ সেরূপ কিছু নহে, বরং ঠিক তাহার বিপরীত ;"উহা ধীরে ধীরে অজ্ঞাতসারে মানবমনে