পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের ভবিষ্যৎ » S ግ উহা অন্যের মনে ঠিক সেই স্তরের ভাব উৎপন্ন করে ; এইরূপ প্রবল-ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন পুরুষ মধ্যে মধ্যে আবিভূত হইয়া থাকেন। আর যখনই একজন শক্তিমান পুরুষের শক্তিতে অনেকের ভিতর সেই একই প্রকার ভাবের উদয় হয়, তখনই আমরা শক্তিশালী হইয়া উঠি । একটি প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত দেখ–চার কোটি ইংরেজ ত্রিশ কোটি ভারতবাসীর উপর কিরূপে প্রভূত্ব করিতেছে ! সংহতিই শক্তির মূল—এ কথা বলিলে তোমরা হয়তো বলিবে, উহা তো জড়শক্তি-বলেই সাধিত হয় ; স্বতরাং আধ্যাত্মিক শক্তির প্রয়োজন কোথায় রহিল ? আধ্যাত্মিক শক্তির প্রয়োজন আছে বইকি ! এই চার কোটি ইংরেজ র্তাহাদের সমুদয় ইচ্ছাশক্তি একযোগে প্রয়োগ করিতে পারেন, এবং উহার দ্বারাই তাহাদের অসীম শক্তিলাভ হইয়া থাকে ; তোমাদের ত্ৰিশ কোটি লোকের পুত্যেকেরই ভাব ভিন্ন ভিন্ন স্বতরাং ভারতের ভবিষ্যৎ উজ্জল করিতে হইলে তাহার মূল রহস্যই এই সংহতি, শক্তিসংগ্রহ, বিভিন্ন ইচ্ছাশক্তির একত্র মিলন । আর এখনই আমার মনশ্চক্ষুর সম্মুখে ঋগ্বেদ-সংহিতার সেই অপুর্ব শ্লোক প্রতিভাত হইতেছে : সংগচ্ছধবং সংবদধ্বং সং বে। মনাংসি জানতাম্। দেবা ভাগং যথা পুর্বে ইত্যাদি । —তোমরা সকলে এক-অন্তঃকরণবিশিষ্ট হও, কারণ পুর্বকালে দেবগণ একমন হইয়াই তাহদের যজ্ঞভাগ লাভ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। দেবগণ একচিত্ত বলিয়াই মানবের উপাসনার যোগ্য হইয়াছেন। একচিত্ত হওয়াই সমাজগঠনের রহস্য । আর যতই তোমরা আর্য-দ্রাবিড় ব্রাহ্মণঅব্রাহ্মণ প্রভৃতি তুচ্ছ বিষয় লইয়া বিবাদে ব্যস্ত থাকিবে, ততই তোমরা ভবিষ্যৎ ভারত-গঠনের উপযোগী শক্তি-সংগ্ৰহ হইতে অনেক দূরে সরিয়া যাইবে । কুারণ এইটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করিও যে, ভারতের ভবিষ্যৎ ইহারই উপর নির্ভর করিতেছে। এই ইচ্ছাশক্তিসমূহের একত্র সম্মিলন, এককেন্দ্রীকরণ—ইহাই রহস্ত। প্রত্যেকটি চীনার মনের ভাব ভিন্ন ভিন্ন, আর মুষ্টিমেয় কয়েকটি জাপানী একচিত্ত – ইহার ফল কি হইয়াছে, তাঁহা তোমরা জানো। জগতের ইতিহাসে চিরকালই এইরূপ ঘটিয়া থাকে। দেখিবে, ক্ষুদ্র জাতিগুলি চিরকালই বড় বড় প্রকাও জাতিগুলির উপর প্রভুত্ব করিয়া থাকে, আর ইঙ্গ ১ ঋগ্বেদ, ১৪ ১৯১২