পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামীজীর বাণী ও রচনা ما ام ج সেখানকার অধিকাংশ লোকের ইচ্ছা ছিল খ্ৰীষ্টধর্মের প্রতিষ্ঠা এবং অন্যান্য ধর্মগুলিকে হাস্যাম্পদ করা। কার্যত: ফল তাহাদের ইচ্ছানুরূপ না হইয়া অন্তরূপ হইয়াছিল। বিধির বিধানে আর কিছু হইবার উপায়ই ছিল না। অনেকেই সদয় ব্যবহার করিয়াছিল, তাহাদিগকে যথেষ্ট ধন্যবাদ দেওয়া হইয়াছে । আসল কথা এই –আমার আমেরিকা-যাত্রা ধর্ম-মহাসভার জন্য নয়। এই সভার দ্বারা আমাদের পথ অনেকট পরিষ্কার হইয়াছে, কাজেরও সুবিধা হইয়াছে বটে । সেইজন্য আমরাও উক্ত মহাসভার সভ্যগণের নিকট বিশেষ কৃতজ্ঞ । কিন্তু ঠিক ঠিক বলিতে গেলে আমাদের ধন্যবাদ যুক্তরাষ্ট্রনিবাসী সহৃদয় অতিথিবৎসল উন্নত মার্কিনজাতির প্রাপ্য--যাহাদের মধ্যে ভ্রাতৃভাব অপর জাতি অপেক্ষ বিশেষরূপে বিকশিত হইয়াছে। কোন মার্কিনের সহিত ট্রেনে পাচ মিনিটের জন্য আলাপ হইলেই তিনি তোমার বন্ধু হইবেন এবং অতিথিরূপে বাটীতে নিমন্ত্রণ করিয়া লইয়া গিয়া প্রাণের কথা খুলিয়া বলিবেন । ইহাই মার্কিন চরিত্রের বৈশিষ্ট্য— ইহাই তাহীদের পরিচয় । তাহাদের ধন্যবাদ দেওয়া আমাদের কর্ম নয় । আমার প্রতি তাহাদের সহৃদয়তা বর্ণনাতীত, আমার প্রতি তাহার। যে অপুর্ব সদয় ব্যবহার করিয়াছেন, তাহ প্রকাশ করিতে আমার বহু বৎসর লাগিবে । কিন্তু শুধু মার্কিনগণকে ধন্যবাদ দিলেই চলিবে না ; তাহারা যতদূর ধন্যবাদা, আটলাণ্টিকের অপরপারে সেই ইংরেজজাতিকেও আমাদের সেরূপ বিশেষভাবে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। ইংরেজ জাতির প্রতি আমা অপেক্ষ অধিকতর ঘৃণ পোষণ করিয়৷ কেহই কখন ইংলণ্ডে পদার্পণ করে নাই ; “ཤུ་ཧྲེ་ সভামঞ্চে যে-সকল ইংরেজ বন্ধু রহিয়াছেন, তাহরাই ইহার সাক্ষ্য দিবেন T কিন্তু যত আমি তাহণদের সহিত একত্র বাস করিতে লাগিলাম, যতই তাহাদের সস্থিত মিশিতে লাগিলাম, যতই দেখিতে লাগিলাম ব্রিটিশজাতির জীবনযন্ত্র কিরূপে পরিচালিত হইতেছে, যতই ঐ জাতির হৃৎস্পন্দন কোথায় হইতেছে বুঝিতে লাগিলাম, ততই তাহাদিগকে ভালবাসিতে লাগিলাম। আর হে ভ্রাতৃগণ, এখানে এমন কেহই উপস্থিত নাই, যিনি ইংরেজ জাতিকে এখন আম৷ অপেক্ষা বেশী ভালবাসেন। তাহদের বিষয় ঠিক ঠিক জানিতে হইলে সেখানে কি কি ব্যাপার ঘটিতেছে, দেখিতে হইবে এবং তাহাদের সহিত মিশিতে হইবে। আমাদের জাতীয় দর্শনশাস্ত্র বেদান্ত যেমন সমুদয় দুঃখই অজ্ঞানপ্রস্থত বলিয়া সিদ্ধান্ত কুরিয়াছেন, সেইরূপ ইংরেজ ও আমাদের মধ্যে বিরোধভাবও