পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সর্বাবয়ব বেদান্ত ૨ X જે 黔 হইয়াছিল। অনুমান-বলে এ তত্ত্ব আবিষ্কারের চেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হইয়াছে। বিশেষত: এ বিষয়ে পাশ্চাত্য লেখকগণের অল্পমানসমূহ এতই পরস্পরবিরুদ্ধ যে, এগুলির উপর নির্ভর করিয়া কোনরূপ সময় নির্দেশ করা অসম্ভব। আমরা হিন্দুগণ কিন্তু আধাত্মিক দৃষ্টিতে উহার কোন উৎপত্তি স্বীকার করি না । আমি নিঃসঙ্কোচে বলিতেছি, মানব আধ্যাত্মিক রাজ্যের যাহা কিছু পাইয়াছে বা পাইবে, ইহাই তাহাঁর প্রথম ও ইহাই শেষ । এই বেদস্তুসমূদ্র হইতে সময়ে সময়ে জ্ঞানালোকের তরঙ্গরাজি উখিত হইয়া কথন পুর্বে কথন বা পশ্চিমে প্রবাহিত হইয়াছে। অতি প্রাচীনকালে এই তরঙ্গের প্রবাহ পশ্চিমে এথেন্স, আলেকজান্দ্রিয়া ও এটিওকে ( Antioch ) যাইয়া গ্রীকদিগের চিস্তার গতি নিয়মিত করিয়াছে । সাংখ্যদর্শন যে প্রাচীন গ্রীকদের মনের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার কবিয়ছিল ইহা নিশ্চিত । সাংখ্য ও ভারতীয় অন্যান্য ধর্ম বা দার্শনিক মত উপনিষদ বা বেদান্তরূপ একমাত্র প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত। ভারতেও প্রাচীন বা আধুনিক কালে নানা বিরোধী সম্প্রদায় বর্তমান থাকিলেও ইহাদের সবগুলিই উপনিষদ বা বেদান্তরূপ একমাত্র প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত । তুমি দ্বৈতবাদী হও, বিশিষ্টদ্বৈতবাদী হও, শুদ্ধাদ্বৈতবাদী হও, অথবা অন্য কোন প্রকারের অদ্বৈতবাদী বা দ্বৈতবাদী হও, অথবা তুমি যে নামেই নিজেকে অভিহিত কর না কেন, তোমার শাস্ব উপনিষদই প্রমাণস্বরূপ তোমার পিছনে রহিয়াছে ! যদি ভারতের কোন সম্প্রদায় উপনিষদের প্রামাণ্য স্বীকার না করে, তবে সেই সম্প্রদায়কে ‘সনাতন’-মতাবলম্বী বলিয়া স্বীকার করিতে পারা যায় না । জৈন এবং বৌদ্ধ মতও উপনিষদের প্রামাণ্য স্বীকার করে নাই বলিয়া ভারতভূমি হইতে বিদূরিত হইয়ছিল ; অতএব জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে বেড়ান্ত ভারতের সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট হইয়া রহিয়াছে। আমরা যাহাকে হিন্দুধর্ম বলি, এই অনন্তশাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট মহান অশ্বখবৃক্ষরূপ হিন্দুধর্ম বেদান্তের প্রভাবে সম্পূর্ণ অনুপ্রাণিত। জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে বেদান্তই আমাদের জীবন, বেদস্তই আমাদের প্রাণ, আমরণ আমরা বেদান্তের উপাসক ; আর হিন্দু বলিলেই বেদাষ্ঠী’ বুঝাইয়া থাকে। অতএব ভারতভূমিতে ভারতীয় শ্রোতৃবর্গের সমক্ষে বেদান্ত প্রচার করা আপাতদৃষ্টিতে অসঙ্গত বোধ হয়, কিন্তু যদি কিছু প্রচার করিতে হয়, তবে তাহা