পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ર ૨૨ স্বামীজীর বাণী ও রচনা দক্ষিণাত্যের কোন কোন স্থান ব্যতীত ভারতের সর্বত্র ,এই অদ্বৈতবাদী শৈব সম্প্রদায় বর্তমান। বিশিষ্টদ্বৈতবাদী শৈবগণ বিষ্ণু' নামের পরিবর্তে,শিব নাম বসাইয়াছেন মাত্র, আর জীবাত্মার পরিণামবিষয়ক মতবাদ ব্যতীত অন্যান্য সর্ববিষয়েই রামাহুজ-মতাবলম্বী। রামাতুজের মতাকুবর্তিগণ আত্মাকে "অণু অর্থাং অতি ক্ষুদ্র বলিয়া থাকেন ; কিন্তু শঙ্করাচার্যের অনুবতিগণ তাহকে 'বিভু' অর্থাং সর্বব্যাপী বলিয়া স্বীকার করেন । প্রাচীনকালে অদ্বৈতম তাম্বুবতী সম্প্রদায়ের ংখ্যা অনেক ছিল । এরূপ অকুমান করিবার যথেষ্ট কারণ আছে যে, প্রাচীনকালে এমন অনেক সম্প্রদায় ছিল, যাহাদিগকে শঙ্করাচার্যের সম্প্রদায় সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করিয়া নিজ সম্প্রদায়ের অঙ্গীভূত করিয়াছে। কোন কোন বেদান্তভাষে বিশেষতঃ বিজ্ঞানভিক্ষু-কৃত ভাষে শঙ্করের উপর সময় সময় আক্রমণ দেখিতে পাওয়া যায় ; এখানে বলা আবশ্বক, বিজ্ঞানভিক্ষু যদিও অদ্বৈতবাদী ছিলেন, তথাপি শঙ্করের মায়াবাদ উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করিয়াছেন। স্পষ্টই বোধ হয়, এমন অনেক সম্প্রদায় ছিল, যাহার এই মায়াবাদ স্বীকার করিত না ; এমন কি তাহারা শঙ্করকে ‘প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ বলিতেও কুষ্ঠিত হয় নাই । তাহদের ধারণা ছিল যে, মায়াবাদ বৌদ্ধদিগের নিকট হইতে লইয়া বেদান্তের ভিতর প্রবেশ করানো হইয়ছে । যাহাই হউক, বর্তমান কালে অদ্বৈতবাদিগণ সকলেই শঙ্করাচার্যের অনুবতী, আর শঙ্করাচার্য এবং তাহার শিষ্যগণ আর্যাবর্ত ও দক্ষিণাত্য—উভয়ত্রই অদ্বৈতবাদ বিশেষরূপে প্রচার করিয়াছেন । শঙ্করাচার্যের প্রভাব আমাদের বাঙলাদেশ, কাশ্মীর ও পঞ্জাবে বেশী বিস্তৃত হয় নাই ; কিন্তু দাক্ষিণাত্যে স্মার্তগণ সকলেই শঙ্করাচার্যের অনুবতী ; আর বারাণসী অদ্বৈতবাদের একটি কেন্দ্র বলিয়া আর্বাবর্তের অনেক স্থলে ইহার প্রভাব খুবই বেশী । এখন আর একটি কথা বুঝিতে হইবে যে, শঙ্কর ও রামানুজ কেহই নিজেকে নূতন তত্ত্বের আবিষ্কারক বলিয়া দাবি করেন নাই। রামানুজ স্পষ্টই বলিয়াছিলেন, তিনি বোধায়নের ভাস্থ্যের অমুসরণ করিয়া তদনুসারেই বেদান্তস্বত্রের ব্যাখ্যা করিয়ছেন। ‘ভগবদ্বোধায়নকৃতাং বিস্তীর্ণাং ব্রহ্মস্বত্রবৃত্তিং পুর্বাচার্য: সংচিক্ষিপুঃ তন্মতানুসারেণ স্থত্রাক্ষরাণি ব্যাখ্যাস্তন্তে’ ইত্যাদি কথা তাহার ভাস্থ্যের প্রারম্ভেই আমরা দেখিতে পাই । বোধায়নের ভাষ্য আমার কখনও দেখিবার স্থযোগ হয় নাই। আমি সমগ্র ভারতে ইহার অন্বেষণ করিয়াছি, কিন্তু আমার অদৃষ্টে উক্ত ভাস্যের দর্শনলাভ ঘটে নাই। পরলোকগত