পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সর্বাবয়ব বেদাস্ত ) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী ব্যাসস্থত্রের বোধায়নভাৰ্য ব্যতীত অন্য কোন ভাষা মানিতেন না, আর যদিও তিনি সুবিধা পাইলেই রামানুজের উপর কটাক্ষ করিতে ছাড়েন নাই, কিন্তু তিনি নিজেই কখনও বোধায়নভান্য সাধারণের কাছে উপস্থিত করিতে পারেন নাই । রামাতুজ কিন্তু স্পষ্ট ভাষায় বলিয়াছেন, তিনি বোধায়নের ভাব, স্থানে, স্থানে ভাষা পর্যন্ত লইয়া তাহার বেদান্ত ভাৰ্য্য রচনা করিয়াছেন । শঙ্করাচার্যও প্রাচীন ভাষ্যকারগণের গ্রন্থ অবলম্বন করিয়া তাহার ভাষ্য প্রণয়ন করেন বলিয়া মনে হয় । তাহার ভাস্থ্যের কয়েক স্থলে প্রাচীনতর ভাষাসমূহের উল্লেখ,দেখিতে পাওয়া যায় । আরও যখন তাহার গুরু এবং গুরুর গুরু তাহার মতোই অদ্বৈত-মতাবলম্বী বৈদান্তিক ছিলেন, বরং সময়ে সময়ে এবং কোন কোন বিষয়ে তাহার অপেক্ষাও অদ্বৈততত্ত্ব প্রকাশে অধিকতর অগ্রসর ও সাহসী ছিলেন, তখন ইহা স্পষ্টই বোধ হয়, তিনিও বিশেষ কিছু নুতুন জিনিস প্রচার করেন নাই । রামানুজ যেমন বোধয়নভাষা-অবলম্বনে তাহার ভাষ্য লিখিয়াছেন, শঙ্করও ঐরূপ কাজই করিয়ছিলেন, তবে কোন ভাষা-অবলম্বনে ভাষ্য লিখিয়াছিলেন, তাহ এখন নির্ণয় করিবার উপায় নাই । তোমরা যে-সকল দর্শনের কথা শুনিয়াছ বা যেগুলি দেখিয়াছ, উপনিষদই এগুলির ভিত্তি। যখনই তাহারা শ্রীতির দোহাই দিয়াছেন, তখনই তাহারা উপনিষদকে লক্ষ্য করিয়াছেন। ভারতের অন্যান্য দর্শনও উপনিষদ হইতে জন্মলাভ করিয়াছে বটে, কিন্তু ব্যাস-প্রণীত বেদান্তদর্শনের ন্যায় আর কোন দর্শনই ভারতে তেমন প্রতিষ্ঠা লাভ করিতে পারে নাই। বেদান্তদর্শনও কিন্তু প্রাচীনতর সাংখ্যদর্শনের চরম পরিণতিমাত্র। আর সমগ্র ভারতের, এমন কি সমগ্র জগতের সকল দর্শন ও সকল মতই কপিলের নিকট বিশেষ ঋণী । সম্ভবতঃ মনস্তাত্বিক ও দার্শনিক দিক দিয়া ভারতের ইতিহাসে কপিলুেরই নাম সর্বাগ্রে স্মরণীয়। জগতে সর্বত্রই কপিলের প্রভাব দেখিতে পাওয়া যায়। যেখানে কোন সুপরিচিত দার্শনিক মত বিদ্যমান, সেইখানেই তাহার প্রভাব দেখিতে পাইবে । উহা সহস্ৰ বৎসরের প্রাচীন হইতে পারে, তথাপি সেখানে সেই কপিলের—সেই তেজস্বী মহামহিমময় অপুর্বপ্রতিভাসম্পন্ন কপিলের প্রভাব দেখিতে পাইবে । তাহার মনোবিজ্ঞান ও দর্শনের অধিকাংশ অতি সামান্য সামান্ত পুত্রবর্তন করিয়া ভারতের বিভিন্ন সম্প্রদায় গ্রহণ করিয়াছে । আমাদের বাঙলার নৈয়ায়িকগণ ভারতীয় দৰ্শন-জগতের উপর বিশেষ প্রভাব