পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৪৬

সর্বাবয়ব বেদাস্ত 象\○○ উপনিষৎসমূহে ঋষিগণ আরও অগ্রসর হইয়া বলিয়াছেন, ‘নেতি, নেতি’ অর্থাং ইহা নহে, ইহা নহে। যাহাই হউক, সকল সম্প্রদায়ই ঈশ্বরের অস্তিত্ব-বিষয়ে "একমত । এখন দ্বৈতবাদীদের মত একটু আলোচনা করিব। পূর্বেই বলিয়াছি, এ-যুগে রামানুজকে দ্বৈতবাদী সম্প্রদায়সমূহের মহান প্রতিনিধিরূপে গ্রহণ করিব। বড়ই দুঃখের বিষয় যে, বঙ্গদেশের লোক ভারতের অন্যান্য প্রদেশের বড় বড় ধর্মাচার্যগণসম্বন্ধে অতি অল্পই সংবাদ রাখেন। সমগ্র মুসলমান রাজত্বকালে এক আমাদের শ্রীচৈতন্য ব্যতীত বড় বড় ধর্মাচার্যগণ সকলেই দাক্ষিণাত্যে জন্মিয়াছেন। দাক্ষিণাত্যবাসীর মস্তিষ্কই এখন প্রকৃতপক্ষে সমগ্র ভারত শাসন করিতেছে। কারণ চৈতন্যদেবও দাক্ষিণাত্যেরই সম্প্রদায় -বিশেষভুক্ত ছিলেন । রামানুজের মতে নিত্য পদার্থ তিনটি—ঈশ্বর, জীব ও জগৎ ( , জীবাত্মাসকল নিত্য, আর চিরকালই পরমাত্মা হইতে তাহাদের পার্থক্য থাকিবে, তাহাদের স্বতন্ত্রত্ব কখনও লোপ পাইবে না। রামাতুজ বলেন, তোমার আত্মা আমার আত্মা হইতে চিরকালই পৃথক্ থাকিবে । আর এই জগৎপ্ৰপঞ্চ—এই প্রকৃতিও চিরকালই পৃথকৃরূপে বিদ্যমান থাকিবে । তাহার মতে জীবাত্মা ও ঈশ্বর যেমন সত্য, জগৎপ্রপঞ্চও সেইরূপ । ঈশ্বর সকলের অন্তর্যামী, আর এই অর্থে রামায়ুজ কখন কখন পরমাত্মাকে জীবাত্মার সহিত অভিন্ন–জীবাত্মার স্বরূপ বলিয়াছেন । তাহার মতে প্রলয়কালে যখন সমগ্র জগৎ সস্কুচিত হয়, তখন জীবাত্মাসকলও সঙ্কোচপ্রাপ্ত হইয়া কিছুদিন ঐভাবে অবস্থান করে। পর কল্পের প্রারম্ভে আবার তাহারা বাহির হইয় তাহাদের পুর্ব কর্মের ফলভোগ করিয়া থাকে। রামানুজের মতে যে-কোন কার্যের দ্বারা আত্মার স্বাভাবিক পবিত্রতা ও পূর্ণত্ব সঙ্কুচিত হয়, তাহাই অসৎকর্ম ; আর যাহা দ্বারা উহ। বিকশিত হয়, তাহাই সংকার্য। যাহা আত্মার বিকাশের সহায়তা করে, তাহাই ভাল ; আর যাহা উহার সঙ্কোচের সহায়তা করে, তাহাই মন্দ । এইরূপে আত্মার কখন সঙ্কোচ, কখন বিকাশ হইতেছে ; অবশেষে ঈশ্বরকৃপায় মুক্তিলাভ হইয়া থাকে। রামানুজ বলেন, যাহারা শুদ্ধস্বভাব এবং ঐ ঈশ্বরের কৃপালাভের চেষ্টা করে,তাহারাই উহা লাভ করে। e ১ মধাচার্ধের সম্প্রদায়