পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミVのみ স্বামীজীর বাণী ও রচনা ভারতের দ্বৈতবাদী সম্প্রদায়সমূহের মতে জীবাত্মা চিরকাল জীবাত্মাই থাকিবে। ঈশ্বর জগতের নিমিত্তকারণ ; তিনি পুর্ব হইতেই অবস্থিত উপাদানকারণ হইতে জগং স্বষ্টি করিয়াছেন। অদ্বৈতবাদীদের মতে কিন্তু छैवद्र জগতের নিমিত্ত ও উপাদান-কারণ দুই-ই । তিনি শুধু জগতের স্বইকর্তা নহেন, কিন্তু তিনি উপাদানভূত নিজ সত্তা হইতেই জগং স্বল্প করিয়াছেন ; ইহাই অদ্বৈতবাদীর মত । কতকগুলি কিস্তৃতকিমাকার দ্বৈতবাদী সম্প্রদায় আছে, তাহারা বিশ্বাস করে যে, ঈশ্বর নিজ সত্তা হইতেই এই জগৎকে স্বাক্ট করিয়াছেন, অথচ তিনি জগৎ হইতে চির পৃথক্ ! আবার সকলেই সেই জগৎপতির চির অধীন। আবার অনেক সম্প্রদায় আছে, যেগুলির মত এই যে, ঈশ্বর নিজেকে উপাদান করিয়া এই জগৎ উৎপন্ন করিয়াছেন, আর জীবগণ কালে সান্তভাব পরিত্যাগ করিয়া অনন্তে মিশিয়া নির্বাণলাভ করিবে। কিন্তু এই-সকল সম্প্রদায় এখন লোপ পাইয়াছে। বর্তমান ভারতে যে-সব অদ্বৈতবাদী সম্প্রদায় দেখিতে পাওয়া যায়, তাহারা সকলেই শঙ্করের অমুগামী । শঙ্করের মতে ঈশ্বর মায়াবশেই জগতের নিমিত্ত ও উপাদান-কারণ হইয়াছেন, প্রকৃতপক্ষে নহে । ঈশ্বর যে এই জগং হইয়াছেন, তাহা নহে ; কিন্তু বস্তুতঃ জগং নাই, ঈশ্বরই আছেন । অদ্বৈত বেদান্তের এই মায়াবাদ বুঝা কঠিন । এই বক্তৃতায় আমাদের দর্শনের এই দুরূহ বিষয় আলোচনা করিবার সময় নাই । তোমাদের মধ্যে যাহারা পাশ্চাত্য-দর্শনশাস্ত্রে অভিজ্ঞ, তাহার কাণ্টের ( Kant ) দর্শনে কতকটা এই ধরনের মত দেখিতে পাইবে। তবে তোমাদের মধ্যে যাহারা কান্ট সম্বন্ধে অধ্যাপক ম্যাক্সমুলারের লেখা পড়িয়াছ, তাহাদিগকে সাবধান করিয়া দিতেছি যে, তাহার লেখায় একটা মস্ত ভুল আছে । অধ্যাপকের মতে দেশ-কাল-নিমিত্ত যে আমাদের তত্ত্বজ্ঞানের প্রতিবন্ধক, তাহা কাণ্টই প্রথম আবিষ্কার করেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাহা নহে। শঙ্করই ইহার আবিষ্কর্তা । তিনি দেশ-কালনিমিত্তকে মায়ার সহিত অভিন্ন বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন । সৌভাগ্যক্রমে শঙ্করভান্যে এই ভাবের কথা দুই-এক জায়গায় দেখিতে পাইয়া আমি বন্ধুবর অধ্যাপক মহাশয়কে পাঠাইয়াছিলাম। অতএব দেখিতেছ, কাণ্টের পুর্বেও এই তত্ব ভারতে অজ্ঞাত ছিল না। অদ্বৈতবেদাষ্ঠীদের এই মান্থাবাদ মতটি একটু স্বপূর্ব ধরনের। তাহাদের মতে ব্ৰহ্মই একমাত্র সত্যবন্ত, ভেদ আঁধাগ্রস্থত। । }