পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলম্বোয় স্বামীজীর বক্তৃত৷ >\3 মতে জীবনের একমাত্র সদ্ব্যবহার । র্ত্যহাদের যাহা আছে তাহাই একমাত্র কাম্য বস্তু, আর বাকি সব কিছুই নহে। যদি তিনি মৃত্তিকা দ্বারা কোন অসার বস্তু নিৰ্মাণ করিতে পারেন, অথবা কোন যন্ত্র আবিষ্কার করিতে সমর্থ হন, তবে সব কিছু ফেলিয়া দিয়া ঐগুলিকেই ভাল বলিতে হইবে । শিক্ষা ও বিদ্যার বহুল প্রচার সত্ত্বেও সমগ্র পৃথিবীর এই অবস্থা ! কিন্তু বাস্তবিক পৃথিবীতে এখনও শিক্ষার প্রয়োজন—এখনও সভ্যতার প্রয়োজন । বলিতে কি, এখনও কোথাও সভ্যতার আরম্ভমাত্র হয় নাই, এখনও মনুষ্যজাতির শতকরা নিরানব্বই জন । অল্প-বিস্তর অসভ্য অবস্থায় রহিয়াছে । বিভিন্ন পুস্তকে এই সব কথা পড়িতে পারে, পরধর্ম-সহিষ্ণুতা ও এরূপ তত্ত্ব সম্বন্ধে আমরা গ্রন্থ পাঠ করিয়া থাকি বটে, কিন্তু নিজ অভিজ্ঞতা হইতে আমি বলিতেছি, এখনও পৃথিবীতে এই ভাবগুলি নাই বলিলেই হয় ; শতকরা নিরানব্বই জন এ-সকল বিষয় চিন্তাও করে না । পৃথিবীর যে-কোন দেশে আমি গিয়াছি, সেখানেই দেখিয়াছি—এখনও পরধর্মাবলম্বীর উপর দারুণ নির্যাতন বর্তমান ; নূতন বিষয় শিক্ষণ করা সম্বন্ধে পুর্বেও যে-সকল আপত্তি উঠিত, এখনও সেই পুরানো আপত্তিগুলিই উত্থাপিত হইয়া থাকে জগতে যতটুকু পরধর্ম-সহিষ্ণুতা ও ধর্মভাবের প্রতি সহানুভূতি আছে, কার্যতঃ তাহ এইখানেই—এই আর্যভূমিতেই বিদ্যমান, অপর কোথাও নাই। কেবল এখানেই হিন্দুরা মুসলমানদের জন্য মসজিদ ও খৃষ্টানদের জন্য •গির্জ নির্মাণ করিয়া দেয়, আর কোথাও নহে। যদি তুমি অন্য কোন দেশে গিয়া মুসলমানদিগকে বা অন্য ধর্মাবলম্বিগণকে তোমার জন্য একটি মন্দির নির্মাণ করিয়া দিতে বলে, দেখিবে তাহারা কিরূপ সাহায্য করে। তৎপরিবর্তে তোমার মন্দির এবং পারে তো সেই সঙ্গে তোমার দেহমন্দিরটিও তাহারা ভাঙিয়া ফেলিবার চেষ্টা করিবে । এই কারণেই পৃথিবীর পক্ষে এই শিক্ষার বিশেষ প্রয়োজন—ভারতের নিকট পৃথিবীকে এখনও এই পরধর্ম-সহিষ্ণুতা— শুধু তাহাই নহে, পরধর্মের প্রতি গভীর সহানুভূতি শিক্ষা করিতে হইবে। শিবমহিমঃস্তোত্রে কথিত হইয়াছে : ত্রয়ী সাংখ্যং যোগ: পশুপতিমতং বৈষ্ণবমিতি প্রভিন্নে প্রস্থানে পরমিদমদং পথ্যমিতি চ | রুচীনাং বৈচিত্র্যাদৃজুকুটিলনানাপথজু্যাং ° মৃণামেকো গম্যত্ত্বমসি পয়সামর্ণব ইব ॥