পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬২ স্বামীজীর বাণী ও রচনা কিন্তু আমরা সচরাচর কি করিয়া থাকি ? লোকে নিজেয় কোন কাজের জন্য কোন ধনী লোকের বাড়ি গেল এবং তাহাকে গরীবের বন্ধু’ প্রভৃতি উচ্চ বিশেষণে বিশেষিত করিল। কিন্তু কোন গরীব তাহার বাটীতে আসিলে তিনি হয়তো তাহার গলা কাটিতে প্রস্তুত। অতএব ঐরূপ ধনী ব্যক্তিকে দরিদ্রের বন্ধু বলিয়া সম্বোধন করা তো স্পষ্টই মিথ্যা কথা। আর ইহাই আমাদের মনকে মলিন করিয়া ফেলিতেছে। এই জন্যই শাস্ত্র সতাই বলিয়াছেন, যদি কোন ব্যক্তি বারো বংসর ধরিয়া সত্যভাষণাদি দ্বারা চিত্তশুদ্ধি করেন, আর এই দ্বাদশবর্ষকাল যদি তাহার মনে কখনও কুচিস্তার উদয় না হইয়া থাকে, তবে র্তাহার বাক্সিদ্ধি হইবে—র্তাহার মুখ দিয়া যে-কথা বাহির হইবে, তাহাই ফলিবে । সত্যভাষণের এমনই অমোঘ শক্তি, এবং যিনি নিজের অন্তর বাহির উভয়ই শুদ্ধ করিয়াছেন, তিনিই ভক্তির অধিকারী । * তবে ভক্তিরও এমনই মহাত্ম্য যে, ভক্তি নিজেই মনকে অনেক পরিমাণে শুদ্ধ করিয়া দেয় । তুমি যে-ধর্ম সম্বন্ধেই বিচার করিয়া দেখ না, দেখিবে সকল ধর্মেই ভক্তির প্রাধান্য এবং সকল ধর্মই বাহ ও আভ্যস্তর শোঁচের আবশ্যকতা স্বীকার করিয়া থাকে। যদিও য়াহুদী, মুসলমান ও খ্ৰীষ্টানগণ বাহ শোঁচের বাড়াবাড়ির বিরোধী, তথাপি তাহারাও কোন না কোনরূপে কিছু না কিছু বাহ শৌচ অবলম্বন করিয়া থাকে ; তাহারা মনে করে, সর্বদাই কিছু না কিছু পরিমাণে বাহ শোঁচের প্রয়োজন । য়াহুদীদের মধ্যে প্রতিমাপুজা নিষিদ্ধ ছিল, কিন্তু তথাপি তাহদের এক মন্দিরে ‘আর্ক’ নামক এক সিন্দুক এবং ঐ সিন্দুকের ভিতর মুশার দশটি আদেশ’’ ( Tables of the Law ) রক্ষিত থাকিত । ঐ সিন্দুকের উপর বিস্তারিতপক্ষযুক্ত দুইটি স্বৰ্গীয় দূতের মূর্তি থাকিত, এবং উহাদের ঠিক মধ্যস্থলে তাহারা ঈশ্বরাবির্ভাব দর্শন করিতেন। অনেক দিন হইল য়াহুদীদের সেই প্রাচীন মন্দির নষ্ট হইয়া গিয়াছে, কিন্তু নূতন নূতন মন্দিরগুলিও সেই প্রাচীন ধরনেই নির্মিত হইয়া থাকে, আর এখন খ্ৰীষ্টানদের মধ্যে ঐ সিন্দুকে ধর্মপুস্তক রাখা হয় । রোমান ক্যাথলিক ও গ্রীক খ্ৰীষ্টানদের মধ্যে প্রতিমাপুজা অনেক পরিমাণে প্রচলিত । উহারা যীশুর এবং তাঙ্গর মাতার প্রতিমূর্তি পূজা করিয়া থাকে। প্রোটেষ্টান্টদের মধ্যে প্রতিমাপুজা নাই, কিন্তু তাহারাও ঈশ্বরকে ব্যক্তিবিশেষ-রূপে উপাসনা করিয়া থাকে। উহাও প্রতিমাপুজার রূপান্তর মাত্র। পারসী ও