পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭ઝ স্বামীজীর রাণী ও রচনা দিবার মতো জ্ঞান আমার অতি অল্পই আছে। দেশের পুর্বাঞ্চল হইতে আমি পশ্চিমাঞ্চলের ভ্রাতৃগণের সহিত সম্ভাষণ বিনিময় করিতে এবং পরস্পরের ভাব মিলাইবার জন্য আসিয়াছি । আমি এখানে আসিয়াছি—আমাদের মধ্যে কি বিভিন্নতা আছে তাহ বাহির করিবার জন্য নহে, আসিয়াছি আমাদের মিলনভূমি কোথায় তাহাই অন্বেষণ করিতে ; কোন ভিত্তি অবলম্বন করিয়া আমরা চিরকাল সৌভ্রাত্রস্থত্রে আবদ্ধ থাকিতে পারি, কোন ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হইলে যে-বাণী অনন্তকাল ধরিয়া আমাদিগকে আশার কথা শুনাইয়া আসিতেছে, তাহা প্রবল হইতে প্রবলতর হইতে পারে, তাহা বুঝিবার চেষ্টা করিতে আমি এখানে আসিয়াছি। আমি এখানে আসিয়াছি তোমাদিগের নিকট কিছু গঠনমূলক প্রস্তাব করিতে, কিছু ভাঙিবার পরামর্শ দিতে নয় । সমালোচনার দিন চলিয়া গিয়াছে, আমরা এখন কিছু গড়িবার জন্য অপেক্ষা করিয়া রহিয়াছি । জগতে সময় সময় সমালোচনা—এমন কি, কঠোর সমালোচনারও প্রয়োজন হইয়া থাকে, কিন্তু সে অল্প দিনের জন্য । অনন্ত কালের জন্য কার্য—উন্নতির চেষ্টা, গঠন, সমালোচনা বা ভাঙাচোরা নহে। প্রায় বিগত এক শত বর্ষ ধরিয়া আমাদের দেশের সর্বত্র সমালোচনার বন্যা বহিয়াছে— পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের তীব্র রশ্মিজাল অন্ধকারময় দেশগুলির উপর পড়িয়া অন্যান্ত স্থান অপেক্ষ আমাদের আনাচে-কানাচে, গলিঘুজিতেই মেন সাধারণের অধিকতর দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে। স্বভাবতই আমাদের দেশের সর্বত্র মহা মহা মনীষিগণের—শ্রেষ্ঠ মহিমময় সত্যনিষ্ঠ ন্যায়ানুরাগী মহাত্মাগণের অভু্যদয় হইল । তাহাদের হৃদয়ে অপার স্বদেশপ্রেম এবং সর্বোপরি ঈশ্বর ও ধর্মের প্রতি প্রবল অনুরাগ ছিল। আর এই মহাপুরুষগণ স্বদেশকে এত প্রাণের সহিত ভালবাসিতেন বন্ধিয়া, তাহদের প্রাণ স্বদেশের জন্য কাদিত বলিয়া, তাহারা যাহা কিছু মন্দ বলিয়া বুঝিতেন তাহাই তীব্রভাবে আক্রমণ করিতেন। অতীতকালের এই মহাপুরুষগণ ধন্য—তাহারা দেশের অনেক কল্যাণ-সাধন করিয়াছেন ; কিন্তু বর্তমান যুগের বাণী আমাদের কাছে আসিয়া বলিতেছে ; যথেষ্ট ! সমালোচনা ষথেষ্ট হইয়াছে, দোষদর্শন যথেষ্ট হইয়াছে ; এখন নূতন করিয়া গড়িবার সময় আসিয়াছে, এখন আমাদের সমস্ত বিক্ষিপ্ত শক্তিকে সংহত করিবার, এগুলিকে কেন্দ্রীভূত করিবার সময় আসিয়াছে, সেই সমষ্টিশক্তির সহায়তায় শত শতাব্দী ধরিয়া ষে জাতীয় অগ্রগতি প্রায় অবরুদ্ধ হইয়া রহিয়াছে, তাহা সম্মুখে