পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দুধর্মের সাধারণ ভিত্তি - २४>७ প্রকৃষ্ট সাক্ষ্য। জ্বাতির পর জাতি উঠিয়া জড়বাদের উপর নিজ মহত্বের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়াছিল, তাহারা জগতের নিকট ঘোষণা করিয়াছিল—মানুষ জড়মাত্র। লক্ষ্য করিয়া দেখ, পাশ্চাত্য মৃত্যুর কথা বলিতে গিয়া বলে, ‘মানুষ আত্মা ত্যাগ করে” । আমাদের ভাষা কিন্তু বলে, সে দেহত্যাগ করিল। পাশ্চাত্যদেশীয় লোক নিজের কথা বলিতে গেলে প্রথমে দেহকেই লক্ষ্য করিয়া থাকে, তাহার পর তাহার একটি আত্মা আছে বলিয়া উল্লেখ করে ; কিন্তু আমরা প্রথমেই নিজেকে আত্মা বলিয়া চিন্তা করি, তারপর আমার একটা দেহ আছে—এই কথা বলি। এই দুইটি বিভিন্ন বাক্য আলোচনা করিলেই দেখিতে পাইবে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য চিন্তাপ্রণালীর কত পার্থক্য । এই কারণে যে-সকল সভাত দৈহিক মুখম্বাচ্ছন্দ্যরূপ বালির ভিত্তির উপর স্থাপিত,তাহারা অল্পদিনমাত্র জীবিত থাকিয়া জগং হইতে একে একে লুপ্ত হইয়াছে, কিন্তু ভারত এবং অন্যান্য যে-সকল জাতি ভারতের পদ প্রাস্তে বসিয়া শিক্ষালাভ করিয়াছে-—যথা চীন ও জাপান—এখনও জীবিত ; এমন কি, উহাদের ভিতর পুনরভু্যখানের লক্ষণসমূহ দেখা যাইতেছে। তাহারা যেন রক্তবীজের ন্যায় ; সহস্রবার তাহাদিগকে নষ্ট কর—তাহারা পুনরুজ্জীবিত হইয়া নৃতন মহিমায় । প্রকাশিত হইতেছে । কিন্তু জড়বাদের উপর যে-সভ্যতার ভিত্তি স্থাপিত, তাহা একবার নষ্ট হইলে আর কখনও জাগে না ; একবার সেই অট্টালিকা পডিয়া গেলে একেবারে চুর্ণবিচূর্ণ হইয়া যায়। অতএব ধৈর্যধারণপূর্বক অপেক্ষ কুর ; ভবিষ্কং গৌরব আমাদের জন্য সঞ্চিত রহিয়াছে। ও ব্যস্ত হইও না ; অপর ক্যুহাকেও অনুকরণ করিতে যাইও না। আমাদিগকে এই আর একটি বিশেষ বিষয় স্মরণ রাখিতে হইবে-অপরের অমুকরণ সভ্যতা বা উন্নতির লক্ষণ নহে। আমি নিজেকে রাজার বেশে ভূষিত করিতে প্লারি, *তাহাতেই কি আমি রাজা হইব ? সিংহচর্মাবৃত গর্দভ কখন সিংহ হয় না। অনুকরণ-হীন কাপুরুষের মতো অনুকরণ কখনই উন্নতির কারণ হয় না, বরং উহা মানুষের ঘোর অধঃপতনের চিহ্ন | যখন মানুষ নিজেকে ঘৃণা করিতে আরম্ভ করে, তখন বুঝিতে হইবে তাহার উপর শেষ আঘাত পড়িয়াছে ; যখন সে নিজ পুর্বপুরুষগণকে স্বীকার করিতে লজ্জিত হয়, তখন বুঝিতে হইবে - * - > A man gives up the ghost,