পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨છેર স্বামীজীর বাণী ও রচনা না বুঝিয়া কোন পুরাতন উপকথা বা অবৈজ্ঞানিক দুর্বোধ্য শব্দরাশি আপনাদিগকে গলাধঃকরণ করিতে বলিতেছি না, কতকগুলি পুরাণের ভিতর দুর্ভাগ্যবশতঃ যে-সকল বামাচারী ব্যাখ্যা প্রবেশ করিয়াছে, তাহাদের প্রত্যেকটিতে বিশ্বাস করিতে বলিতেছি না ; কিন্তু আমার বক্তব্য এই যে, এগুলির ভিতর একটি সারবস্তু আছে, এগুলির লোপ ন পাইবার একটি কারণ আছে ; আর ভক্তির উপদেশ দেওয়া, ধর্মকে দৈনন্দিন জীবনে পরিণত করা, দার্শনিক উচ্চস্তরে বিচরণশীল ধর্মকে সাধারণ মানবের দৈনন্দিন জীবনে পরিণত করাই পুরাণগুলির স্থায়িত্বের কারণ । মানুষ এখন যে-অবস্থায় আছে, ঈশ্বরেচ্ছায় তাহা না হইলে বড় ভাল হইত। কিন্তু বাস্তব ঘটনার প্রতিবাদ করা বৃথা । মানুষ চৈতন্য, আধ্যাত্মিকতা প্রভৃতি সম্বন্ধে যতই বাগাড়ম্বর করুক না কেন, এখনও সে জড়ভাবাপন্ন। সেই জড়ভাবাপন্ন মানবকে হাতে ধরিয়া ধীরে ধীরে তুলিতে হইবে, যতদিন না সে চৈতন্যময়, সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিকভাবাপন্ন হয় । আজকালকার দিনে শতকর। নিরানব্বই জন লোকের পক্ষে আধ্যাত্মিকতা বুঝা কঠিন, এ বিষয়ে কিছু বলা আরও কঠিন । যে প্রেরণা-শক্তি আমাদিগকে কার্যক্ষেত্রে আগাইয়া দিতেছে এবং যে-সব ফল আমরা লাভ করিতে চাহিতেছি, সে-সবই জড় । হার্বাট স্পেন্সারের ভাষায় বলি—আমরা কেবল স্বল্পতম বাধার পথে কাজ করিতে পারি । পুরাণকারগণের এই সহজ কাণ্ডজ্ঞান" ছিল বলিয়াই তাহারা লোককে এই স্বল্পতম বাধার পথে কাজ করিবার প্রণালী দেখাইয়া গিয়াছেন । এইভাবে উপদেশ দেওয়াতে পুরাণগুলি লোকের কল্যাণসাধনে যেরূপ কৃতকার্য হইয়াছে, তাহ বিস্ময়কর ও অভূতপূর্ব ; ভক্তির আদর্শ অবশু চৈতন্যময় বা আধাত্মিক, কিন্তু তাহার পথ জড়ের ভিতর দিয়া, আর এই জড়ের সহায়তা অবলম্বন করা ব্যতীত গত্যন্তর নাই। অতএব জড়জগতের যাহা কিছু এই আধ্যাত্মিকতা লাভ করিতে সাহায্য করে, সেই-সব লইতে হইবে এবং সেগুলিকে এমনভাবে আমাদের কাজে লাগাইতে হইবে, যাহাতে জড়ভাবাপন্ন মানুষ ক্রমে উন্নত হইয়া আধ্যাত্মিকভাবাপন্ন হইতে পারে । শাস্ত্র গোড়। হইতেই জাতিবর্ণধর্মনির্বিশেষে স্ত্রীপুরুষ সকলকেই বেদপাঠে অধিকার প্রদান করিয়াছে। যদি জড় বস্তু দ্বারা মন্দির নির্মাণ করিয়া মানুষ ভগবানকে অধিক ভালবাসিতে পারে, সে তো খুব ভাল কথা ; যদি ভগবানের প্রতিমা গঠন করিয়৷