পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদান্ত Woo Y পরস্পরবিরোধী নহে। আমাদের ষড়দর্শন যেমন মহান তত্ত্বসমূহের ক্রমবিকাশমাত্র, ইত ঘুেমন অতি মৃদুধ্বনিতে আরম্ভ করিয়া শেষে অদ্বৈতের বজ্রনির্ঘোষে পরিণত হইয়াছে, তেমনি পুর্বোক্ত তিনটি মতেও আমরা দেখিতে পাই, মানবমন উচ্চ হইতে উচ্চতর আদশের দিকে অগ্রসর হইয়াছে—অবশেষে সবগুলিই অদ্বৈতবাদের সেই বিস্ময়কর একত্বে পর্যবসিত হইয়াছে । অতএব এই তিনটি পরম্পরবিরোধী নহে । অপর দিকে আমি বলিতে বাধ্য, অনেকে এই ভ্ৰমে পতিত হইয়াছেন যে, এগুলি পরস্পরবিরোধী। আমরা দেখিতে পাই, যে শ্লোকগুলিতে বিশেষভাবে অদ্বৈতবাদের শিক্ষা দেওয়া হইয়াছে, অদ্বৈতবাদী সেইগুলিকে যথাযথ রাখিয়া দিতেছেন, কিন্তু যেখানে দ্বৈতবাদ বা বিশিষ্টাদ্বৈতবাদের উপদেশ আছে,টানিয়া সেইগুলির অদ্বৈত অর্থ করিতেছেন। আবার দ্বৈতবাদী আচার্যগণ দ্বৈত শ্লোকগুলির যথাযথ অর্থ করিয়া অদ্বৈত শ্লোকগুলি টানিয়া দ্বৈত অর্থ করিতেছেন। অবশ্ব ইহারা মহাপুরুষ—আমাদের গুরুপদবাচ্য। তবে ইহাও কথিত হইয়াছে যে, ‘দোষ বাচ্য গুরোরপি'–গুরুরও দোষ বলা উচিত । আমার মত এই যে, কেবল এই বিষয়েই র্তাহারা ভ্ৰমে পড়িয়াছিলেন । শাস্ত্রের বিকৃত ব্যাখ্যা করিবার প্রয়োজন নাই, কোনরূপ ধর্মীয় অসাধুতার আশ্রয় লইয়া ধর্মব্যাখ্যার অবশ্যক নাই, ব্যাকরণের মারপ্যাচ করিবার দরকার নাই, যে-সকল শ্লোকের দ্বারা যে-সকল ভাব কখনই উদ্দিষ্ট হয় নাই, সেই-সকল শ্লোকের ভিতর সুমাদের নিজেদের ভাব প্রবেশ করাইবার কোন প্রয়োজন নাই । শ্লোকের সাদাসিধা অর্থ বুঝা অতি সুহজ, আর যখনই তোমরা অধিকার-ভেদের অপূর্ব রহস্য বুঝিবে, তখনই উহা তোমাদের নিকট অতি সহজ বলিয়া প্রতীয়মান হইবে । ইহা সত্য যে, উপনিষদসমূহের লক্ষ্য একটি : কি সেই বস্তু, যাহাকে জানিলে সমুদয় জানা হয়—'কম্মিনু ভগবো বিজ্ঞাতে সর্বমিদং বিজ্ঞাতং ভবতীতি।” আধুনিক কালের ভাষায় বলিতে গেলে বলিতে হয়, উপনিষদের উদ্দিষ্ট বিষয় হইল চরম একত্ব আবিষ্কার করিবার চেষ্টা । আর বহুত্বের মধ্যে একত্বের অমুসন্ধান ছাড়া জ্ঞান আর কিছুই নহে। সকল বিজ্ঞানই এই ভিত্তির উপর ১ মুণ্ডক উপ, ১।৩,