পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\o a 9 স্বামীজীর বাণী ও রচনা প্রাথমিক অবস্থায় পরিণত হয়—কিছুকালের জন্য ঐ অবস্থায়, শাস্তভাবে থাকে, —আবার ক্রমশঃ প্রকাশেমুখ হয়। ইহাই স্বাক্ট। আর এই শক্তিগুলির —প্রাণশক্তির কি হয় ? তাহারা আদি-প্রাণে পরিণত হয় ; এই প্রাণ তখন প্রায় গতিহীন হয়—সম্পূর্ণরূপে গতিশূন্য কখনই হয় না, আর বৈদিক স্বত্তের ‘আনীদবাতং’ • — গতিহীনভাবে স্পন্দিত হইয়াছিল—এই বাক্যের দ্বারা এই তত্ত্বেরই বর্ণনা করা হইয়াছে । বেদের অনেক পারিভাষিক শব্দের অর্থ নির্ণয় করা অতিশয় কঠিন । উদাহরণস্বরূপ এই বাত’ শব্দ ধর । কখন কখন ইহার দ্বারা বায়ু বুঝায়, কখন কখন গতি বুঝায়। লোকে অনেক সময় এই দুই অর্থ লইয়া গোল করিয়া থাকে। এই বিষয়ে সাবধান হইতে হইবে । আর তখন ভূতের বা জড়পদার্থের কি অবস্থা হয় ? শক্তি সর্বভূতে ওতপ্রোত রহিয়াছে। সেই সময় সকলই আকাশে লীন হয়—আবার আকাশ হইতে প্রকাশিত হয় । এই আকাশই আদিভূত । এই আকাশ প্রাণের শক্তিতে স্পন্দিত হইতে থাকে, । আর যখন নূতন স্বষ্টি হইতে থাকে, তখন যেমন যেমন স্পন্দন দ্রুত হয়, অমনি এই আকাশ তরঙ্গায়িত হইয়া চন্দ্রস্থর্য-গ্রহ-নক্ষত্রাদির আকার ধারণ করে। অন্য স্থলে আছে—“যদিদং কিঞ্চ জগৎ সর্বং প্রাণ এজতি নিঃস্থতম্।’ —এই জগতে- যাহা কিছু আছে, প্রাণ কম্পিত হইতে থাকিলে সকলই বাহির হয়। এখানে এজতি’ শব্দটি লক্ষ্য করিও—এজ’ ধাতুর অর্থ কম্পিত হওয়া । ‘নিঃস্থতম অর্থ বাহিরে প্রক্ষিপ্ত ; যদিদং কিঞ্চ”—জগতে যাহা কিছু। প্রপঞ্চ-স্বষ্টির কিঞ্চিৎ আভাস দেওয়া হইল। বিস্তার করিয়া বলিতে গেলে অনেক কথা বলিতে হয়। কি প্রণালীতে স্বষ্টি হয়, কিভাবে প্রথমে আকাশের এবং আকাশ হইতে অন্যান্য বস্তুর উৎপত্তি হয়, আকাশের কম্পন হইতে বায়ুর উৎপত্তি কিভাবে হয় ইত্যাদি—অনেক কথা বলিতে হয়। তবে ইহার মধ্যে একটি কথা স্পষ্ট যে, স্বক্ষ হইতে স্কুলের উৎপত্তি হইয়া থাকে, সর্বশেষে স্থূল ভূত উৎপন্ন হয়। ইহাই সর্বাপেক্ষা বাহিরের বস্তু, আর এই স্কুল ভূতের পশ্চাতে স্বল্প ভূত রহিয়াছে। এতদূর বিশ্লেষণ করিয়াও কিন্তু আমরা দেখিতে পাইলাম, সমুদয় জগৎকে দুই তত্ত্বে পর্যবসিত করা হইয়াছে মাত্র, এখনও চরম একত্বে পৌছানো যায় নাই । শক্তিবর্গ প্রাণরূপ এক শক্তিতে এবং জড়বর্গ আকাশরুপ ১ ঋগ্বেদ, ১ • ১৪৯-৩২