পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদান্ত \うe 。 যায়। উপাসনাপ্রণালী হিসাবে দ্বৈতবাদ প্রভৃতি খুব ভাল বটে, ঐগুলি মনের খুব তৃপ্তিকর বটে ; হইতে পারে—ঐগুলি মনকে উচ্চতর পথে অগ্রসর হইতে সাহায্য করে, কিন্তু যদি কেহ একই সঙ্গে যুক্তিবিচারশীল এবং ধর্মপরায়ণ হইতে চায়, তবে তাহার প্লক্ষে অদ্বৈতবাদই একমাত্র পস্থা । যাহা হউক, আমরা পূর্বেই দেখিয়াছি, মনও দেহের মতো একটি নদীস্বরূপ— নিয়তই একদিকে শূন্ত হইতেছে, অপরদিকে পূর্ণ হইতেছে ; তবে সেই একত্ব কোথায়, যাহাকে আমরা ‘আত্মা’ বলিয়া অভিহিত করি ? আমরা দেখি, আমাদের দেহে ও মনে এইরূপ ক্রমাগত পরিবর্তন হইতে থাকিলেও আমাদের মধ্যে এমন কিছু আছে, যাহা অপরিবর্তনীয়—যাহার জন্ত আমাদের ধারণাগুলি অপরিবর্তনীয় বলিয়া মনে হয়। যদি বিভিন্ন দিক হইতে বিভিন্ন আলোকরাশি আসিয়া একটি যবনিক বা দেয়াল বা অপর কোন অচল বস্তুর উপর পড়ে, তখন —কেবল " তখনই ঐগুলি এক অখণ্ড সমষ্টির আকার ধারণ করিতে পারে । মানুষের বিভিন্ন শারীর্যন্ত্রসমূহের মধ্যে কোথায় সেই নিশ্চল অখণ্ড বস্তু, যাহার উপর বিভিন্ন ভাবরাশি পতিত হইয়া অখণ্ডত্বের ভাব প্রাপ্ত হইতেছে ? অবশ্য মন কখনও সেই বস্তু হইতে পারে না, কারণ মনও পরিবর্তনশীল । অতএব এমন কিছু বস্তু অবশুই আছে, যাহা দেহও নহে, মনও নহে, যাহার কথন পরিণাম হয় না, যাহার উপর আমাদের সমুদয় ভােবরাশি, সমুদয় বাহ বিষয় আসিয়া এক অখণ্ডভাবে পরিণত হয়—ইহাই প্রকৃতপক্ষে আমাদের আত্মা । আর যখন দেখিতে পাইতেছি সমুদয় জড়পদার্থ—তাহাকে স্বক্ষ জড় অথবা মন যে-নামেই অভিহিত কর না—এবং সমৃদু স্কুল, জড় বা বাহ জগৎ উহার সহিত তুলনায় পরিবর্তনশীল, তখন এই অপরিবর্তনীয় বস্তুটি কখনই জড় পদার্থ হইতে পারে না ; অতএব উহা চৈতন্তস্বভাব অর্থাৎ উহা জড় নয় , উহা অবিনাশী ও “অপরিণামী । তাহার পর আর একটি প্রশ্ন আসে। অবশু বাহ জগৎ দেখিয়া ‘কে উহ স্বষ্টি করিল, কে জড় পদার্থ স্বষ্টি করিল ?—এইরূপ প্রশ্ন করিয়া ক্রমশ: উদেশ্ববাদ আনিবার যে পুর্বপ্রচলিত যুক্তি রহিয়াছে—আমি তাহার কথা বলিতেছি না । মানুষের অন্তঃপ্রকৃতি হইতেই সত্যকে জানু হইবে—আত্মা সম্বন্ধে যেমন প্রশ্ন উঠিয়াছিল, এ প্রশ্নও ঠিক সেইভাবেই উঠিয়াছিল। যদি স্বীকার করা যায় যে, প্রত্যেক মাইষেরই মধ্যে দেহ ও মন হইতে ਬਾਣੀ এক-একটি অপরিবর্তনীয়