পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদান্ত טלט বিষয় বিশেষরূপে আলোচনা করিব। তবে ইহা বলিয়া রাখি যে, বাল্যবিবাহপ্রথা যে-সকল মূলভাব হইতে উদ্ভূত হইয়াছে, সেই-সকল ভাব অবলম্বন করিয়াই প্রকৃত সভ্যতার সঞ্চার হইতে পারে, অন্য কিছুতেই নহে। যদি প্রত্যেক নর-নারীকে অপর যে-কোন নর-নারীকে পতি বা পত্নীরূপে গ্রহণের স্বাধীনতা দেওয়া যায়, যদি ব্যক্তিগত স্বথ ও পাশবপ্রকৃতির পরিতৃপ্তি সমাজে অবাধে চলিতে থাকে, তাহার ফল নিশ্চয়ই অশুভ হইবে—দুষ্টপ্রকৃতি অসুরস্বভাব সস্তানসমূহের উৎপত্তি হইবে। একদিকে প্রত্যেক দেশে মানুষ এই-সকল পশুপ্রকৃতি সস্তান উৎপাদন করিতেছে, অপর দিকে তাহাদিগকে বশে রাখিবার জন্য পুলিশ বাড়াইতেছে। এভাবে সামাজিক ব্যাধির প্রতিকারের চেষ্টায় বিশেষ ফল নাই, বরং কিভাবে সমাজ হইতে এই-সকল দোষ, এই-সকল পশুপ্রকৃতি সস্তানের উৎপত্তি নিবারিত হইতে পারে, তাহাই মহাসমস্তু" আর যতদিন তুমি সমাজে বাস করিতেছ, ততদিন তোমার বিবাহের ফল নিশ্চয়ই আমাকে এবং আর সকলকেই ভোগ করিতে হয়, সুতরাং তোমার কিরূপ বিবাহ করা উচিত, কিরূপ উচিত নয়, এ বিষয়ে তোমাকে আদেশ করিবার অধিকার সমাজের অাছে। ভারতীয় বাল্যবিবাহ-প্রথার পশ্চাতে এই-সকল উচ্চতর ভাব ও তত্ত্ব রহিয়াছে – কোষ্ঠীতে বরকন্যার ঘেরূপ ‘জাতি’ ‘গণ’ প্রভৃতি লিখিত থাকে, এখনও তদনুসারেই হিন্দুসমাজে বিবাহ হয়। আর প্রসঙ্গক্রমে ইহাও বলিতে চাই যে, মনুর মতে কামোদ্ভূত পুত্র ‘আর্য নহে। যেসস্তানের জন্মমৃত্যু বেদের বিধানাচুযায়ী, সে-ই প্রকৃতপক্ষে আর্য । আজকাল সকল দেশেই এইরূপ আর্যসন্তান খুব অল্পই জন্মিতেছে এবং তাহার ফলেই কলিযুগ নামক দোষরাশির উৎপত্তি হইয়াছে। আমরা প্রাচীন মহান আদর্শসমূহ ভুলিয়া গিয়াছি। সত্য বটে যে, আমরা এখন এই-সকল ভাব সম্পূর্ণরূপে কার্যে পরিণত করিতে পারি না ; ইহাও সম্পূর্ণ সত্য যে, আমরা এই সকল মহান ভাবের কতকগুলিকে লইয়া একটা বিকৃত হাস্যকর ব্যাপার করিয়া তুলিয়াছি। অতি দুঃখের বিষয় যে, আজকাল আর প্রাচীন কালের মতো পিতামাতা নাই, সমাজও এখন পুর্বের মতো শিক্ষিত নয়, আর পুর্বে যেমন সমাজভূক্ত সকল লোকের উপর একটা ভালবাসা ছিল, এখনকার সমাজে তাহ নাই। কিন্তু তাহা হইলেও কার্যকালে যে রূপই গ্রহণ করুক না কেন, মূল তত্ত্বটি নির্দোষ, আর যদি ঐ তত্ত্ব ঠিকমত কাজে পরিণত नौ হইয়া থাকে, যদি প্রণালী