পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামীজীর বাণী ও রচনা 8 כס\ বিশেষ বিফল হইয়া থাকে, তবে मूल তত্ত্বটি লইয়া যাহাতে উহা ভালভাবে কাজে পরিণত হয়, তাহার চেষ্টা কর । মূল তত্ত্বটিকে নষ্ট করিয়া ফেলিবার চেষ্টা কর কেন ? খাদ্যসমস্যা সম্বন্ধেও এই কথা খাটে। ঐ তত্ত্বও যেভাবে কাজে পরিণত হইতেছে, তাহা খুব খারাপ বটে, কিন্তু তাহাতে ঐ তত্ত্বের কোন দোষ নাই । উহা সনাতন, চিরকালই উহা থাকিবে । তত্ত্বটি যাহাতে ভাল করিয়া কাজে পরিণত হয়, তাহার চেষ্টা কর । ভারতে আমাদের সকল সম্প্রদায়কে আত্মা সম্বন্ধে পূর্বোক্ত মহান তত্ত্ব বিশ্বাস করিতে হয়। শুধু দ্বৈতবাদীরা বলেন—পরে আমরা ইহা বিশেষভাবে দেখিব—অসংকর্মের দ্বারা উহা সঙ্কোচপ্রাপ্ত হয়, উহার সমুদয় শক্তি ও স্বভাব সঙ্কুচিত হইয়া যায়, আবার সংকর্মের দ্বারা সেই স্বভাবের বিকাশ হয়। অদ্বৈতবাদী বলেন, আত্মার কখনই সঙ্কোচ বা বিকাশ কিছুই হয় না, এরূপ হইয়াছে বলিয়া মনে হয় মাত্র | দ্বৈতবাদী ও অদ্বৈতবাদীর মধ্যে এইমাত্র প্রভেদ। তবে সকলেই এ-কথা স্বীকার করিয়া থাকেন যে, আত্মাতে পুর্ব হইতেই সকল শক্তি অবস্থিত, বাহির হইতে কোন কিছু যে আত্মাতে আসিবে তাহা নহে, কোন জিনিস যে উহাতে আকাশ হইতে পড়িবে, তাহা নহে । এইটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করিও যে, তোমাদের বেদসমূহ inspired—বাহির হইতে ভিতরে অসিতেছে এরূপ নহে, expired—ভিতর হইতে বাহিরে আসিতেছে, বেদসমূহ প্রত্যেক আত্মীয় নিহিত সনাতন নিয়মাবলী। পিপীলিকা হইতে দেবতা পর্যন্ত সকলেরই আত্মায় বেদ অবস্থিত। পিপীলিকাকে હ বিকাশপ্রাপ্ত হইয়া ঋষিদেহ লাভ করিতে হইবে ; তখনই তাহার ভিতর বেদ অর্থাৎ সনাতন নিয়মাবলী প্রকাশিত হইবে। এই মহান তত্ত্বটি বুঝা বিশেষ প্রয়োজন যে, আমাদের ভিতরে পুর্ব হইতেই শক্তি বর্তমান, মুক্তি পূর্ব হইতেই আমাদের ভিতরে রহিয়াছে । হয় বলে—শক্তি সঙ্কোচপ্রাপ্ত হইয়াছে, অথবা বলো--"মায়ার আবরণে আবৃত হইয়াছে, তাহাতে কিছু আসে যায় না । এইটুকু বুঝিতে হইবে যে, পুর্ব হইতেই উহা ভিতরে রহিয়াছে। তোমাদিগকে ইহা বিশ্বাস করিতে হইবে ; প্রত্যেকের ভিতরে অনন্ত শক্তি যে গৃঢ়ভাবে রহিয়াছে, তাহ বিশ্বাস করিতে হইবে—বিশ্বাস করিতে হইবে যে, বুদ্ধের ভিতর যে-শক্তি রহিয়াছে, অতি নিম্নতম মাহুষের মধ্যে তাহ রহিয়াছে। ইহাই হিন্দুদের আত্মতত্ব।