পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○、や স্বামীজীর বাণী ও রচনা নাই, নামরূপ তরঙ্গের সহিতই বর্তমান। তরঙ্গ অন্তৰ্হিত হইতে পারে, তরঙ্গের অন্তর্গত নামরূপ যদি চিরকালের জন্য অন্তৰ্হিত হইয়া যায়, তথাপি সেই একই পরিমাণ জল থাকিয়া যাইবে। অতএব এই মায়াই তোমার আমার মধ্যে, জীবজন্তু ও মানবের মধ্যে, দেবতা ও মানবের মধ্যে পার্থক্য স্বষ্টি করিয়াছে। প্রকৃতপক্ষে এই মায়াই যেন আত্মাকে লক্ষ লক্ষ প্রাণীর মধ্যে আবদ্ধ করিয়াছে, আর এই মায়া নাম-রূপ ব্যতীত আর কিছুই নহে। যদি ঐগুলিকে পরিত্যাগ কর—নাম-রূপ দূর করিয়া দাও, তবেই এ-সব পার্থক্য চিরকালের জন্য অন্তহিত হইবে, তখন তুমি প্রকৃতপক্ষে যাহা আছ, তাহাই থাকিবে। ইহাই মায় । মায়া কোন মতবাদ নহে, উহা জগতের ঘটনাবলীর বর্ণনামাত্র । বাস্তববাদিগণ বলেন, এই জগতের অস্তিত্ব আছে । সেই বেচারার অজ্ঞ, বকিবং ; তাহারা যে জগৎ সত্য বলে, তাহা এই অর্থে বলে যে, এই টেবিলটি বা অন্যান্য বস্তুর নিরপেক্ষ সত্তা আছে, উহাদের অস্তিত্ব ব্রহ্মাণ্ডের অপর কোন বস্তুর অস্তিত্বের উপর নির্ভর করে না, আর যদি এই সমগ্র জগং বিনষ্ট হইয়া যায়, তথাপি উহা বা অন্যান্য বস্তু যেমন রহিয়াছে, ঠিক তেমনই থাকিবে । একটু সামান্য জ্ঞানলাভ করিলেই সে বুঝিবে, ইহা কখনই হইতে পারে না । এই ইন্দ্রিয়গ্রাহ জগতের সব কিছুই পরস্পরের উপর নির্ভর করে, উহার আপেক্ষিক । আমাদের বস্তুজ্ঞানের তিনটি সোপান আছে : প্রথম—প্রত্যেক বস্তুই স্বতন্ত্র, পরস্পর পৃথক ; দ্বিতীয় সোপান—সকল বস্তুর মধ্যে পরস্পর সম্বন্ধ বিদ্যমান ; আর শেষ সোপান—একটি মাত্র বস্তু আছে, তাহাকেই আমরা নানারূপে দেখিতেছি । 4 & অজ্ঞ ব্যক্তির ঈশ্বর সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণ এই যে, তিনি এই ব্ৰহ্মাণ্ডের বাহিরে কোথাও রহিয়াছেন, অর্থাৎ তখন ঈশ্বরধারণা খুব মানবভাবাপন্ন—মানুষ যাহা করে, তিনিও তাহাই করেন ; তবে অপেক্ষাকৃত একটু বেশী রকমে করেন। ' আর আমরা পুর্বেই দেখিয়াছি, এরূপ ঈশ্বরকে অল্প কথায় কিরূপে অযৌক্তিক ও অপর্যাপ্ত বলিয়া প্রমাণ করিয়া দেওয়া যায়। ঈশ্বর সম্বন্ধে দ্বিতীয় ধারণা এই যে, একটি শক্তি রহিয়াছে, সর্বত্রই তাহার প্রকাশ । ইনিই প্রকৃত সগুণ ঈশ্বর, চণ্ডীতে ইহার কথা লিখিত মাছে। কিন্তু ইহা লক্ষ্য করিও যে, এই ঈশ্বর কেবল কল্যাণকর গুণরাশির আধার নহেন। ঈশ্বর ও শয়তাম—দুইটি ‘দেবতা" থাকিতে পারে না, এক ཟེ༑་“ অস্তিত্বই স্বীকার করিতে হইবে এবং তঁাহাকে