পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"")● স্বামীজীর বাণী ও রচনা প্রভেদ কি ? অন্ধকারে রাস্তায় গিয়া যদি কোন অসাধারণ ঘটনা ঘটতে দেখ, একজন পথচারীকে উহার কারণ জিজ্ঞাসা কর ; দশ জনের মধ্যে অন্ততঃ নয় জন বলিবে, ভূতে এ ব্যাপার করিতেছে ; সে সর্বদাই ভূত দেখিতেছে, কারণ অজ্ঞানের স্বভাব কার্যের বাহিরে কারণের অনুসন্ধান করা। একটা চিল পড়িলে সে বলে, ভূত বা দৈত্য উহা ফেলিয়াছে। বৈজ্ঞানিক বলে, ইহা প্রকৃতির নিয়ম—মাধ্যাকর্ষণ । 49' সর্বত্রই বিজ্ঞান ও ধর্মে কি বিরোধ ? প্রচলিত ধর্মগুলি বহিমুর্থী ব্যাখ্যায় এতদূর জড়িত যে, স্বর্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা, চন্দ্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা, এইরূপ অনন্ত দেবতার কল্পনা করে, আর ভাবে, যাহা কিছু ঘটিতেছে সবই একটা না একটা দেবতা বা ভূত করিতেছে। ইহার মোট কথাটা এই যে, ধর্ম –কোন কিছুর বNবণ সেই বস্তুর বাহিরে অন্বেষণ করে, আর বিজ্ঞান তাহার কারণ সেই বস্তুর ভিতরেই অন্বেষণ করে । বিজ্ঞান যত ধীরে ধীরে অগ্রসর হইতেছে, ততই উহা প্রাকৃতিক ঘটনার ব্যাখ্যা ভূত-প্রেতের হাত হইতে নিজের হাতে লইতেছে। যেহেতু ধর্মরাজ্যে অদ্বৈতবাদ এই কাজ করিয়াছে, সেই হেতু অদ্বৈতবাদই অধিকতরভাবে বৈজ্ঞানিক ধর্ম। এই জগদব্রহ্মাণ্ড বাহিরের কোন ঈশ্বরের দ্বারা স্বঃ হয় নাই, জগতের বহির্দেশে অবস্থিত কোন দৈত্য তাহা স্বষ্টি করে নাই, আপনা-আপনি স্বল্প হইতেছে, আপনা-আপনি উহার প্রকাশ হইতেছে, আপনা-আপনি উহার প্রলয় হইতেছে, উহা এক অনন্ত সত্তা ব্রহ্ম, তিত্বমসি শ্বেতকেতো –হে শ্বেতকেতে, তুমি সেই । এইরূপে তোমরা দেখিতেছ, অদ্বৈতবাদই একমাত্র বৈজ্ঞানিক ধর্ম—অদ্য কোন মতবাদ নয় ; আর বর্তমান অর্ধশিক্ষিত ভারতে আজকাল প্রত্যহ যে বিজ্ঞানের বুক্‌নি চলিতেছে, প্রত্যহ যে যুক্তির দোহাই শুনিতেছি, তাহাতে আমি আশা করি, তোমরা দলকে দল অদ্বৈতবাদী হইবে, আর বুদ্ধের কথায় বলিতেছি, বহুজনহিতায় বহুজনস্বথায় জগতে উহা প্রচার করিতে সাহসী হইবে। যদি তাহা না পারো, তবে তোমাদিগকে কাপুরুষ মনে করিব । যদি তোমার এইরূপ দুর্বলতা থাকে, যদি তুমি একেবারে প্রকৃত সত্য । স্বীকার করিতে ভয় পাও বলিয়া উহা অবলম্বন করিতে না পারে, তবে ১ ছানোগ্য উপ., ৬৮৭