পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামীজীর বাণী ও রচনা - وفي 8 ينا দেখিতে পাওয়া যায়, এবং দেবচরিত্র-বর্ণনাত্মক মন্ত্রগুলি স্থানে স্থানে অতি অপুর্ব । তারপর আর এক কথা । বেদের ভাষা অতি মহম্ভাব-দ্যোতকু। বিখ্যাত নাসদীয় স্থক্তে প্রলয়ের চমৎকার বর্ণনা আছে। যাহার এই সকল মহান ভাব এইরূপ কবিত্বের ভাষায় বর্ণনা করিয়াছেন, তাহারা যদি, অসভ্য হন, তবে আমরা কি ? সেই ঋষিদের অথবা তাহাদের দেবতা ইন্দ্রবরুণাদির সম্বন্ধে আমি কোনরূপ সমালোচনা করিতে অক্ষম । এ যেন ক্রমাগত পট-পরিবর্তন হইতেছে, এবং পশ্চাতে সেই এক বস্তু রহিয়াছেন, র্যাহাকে জ্ঞানিগণ বহুরূপে বর্ণনা করিয়াছেন —‘একং সদ্বিপ্র বহুধা বদন্তি’। এই দেবগণের বর্ণনা অতি রহস্তময়, অপূর্ব, অতি সুন্দর। উহার দিকে যেন ঘেষিবার জো নাই, উহা এত সূক্ষ্ম যে স্পর্শমাত্রেই যেন উহা ভগ্ন হইয়া যাইবে, মরীচিকার মতো অন্তৰ্হিত হইবে । একটি বিষয় আমার নিকট খুব স্পষ্ট ও সম্ভব বলিয়া প্রতীয়মান হয় যে, গ্রীকদের ন্যায় আর্যগণও জগৎসমস্ত সমাধান করিবার জন্য প্রথমে বহিঃপ্রকৃতির দিকে ধাবমান হইয়াছিলেন—সুন্দর রমণীয় বাহা জগৎ তাহাদিগকেও প্রলোভিত করিয়া ধীরে ধীরে বাহিরে লইয়া গিয়াছিল। কিন্তু ভারতের এইটুকু বিশেষত্ব যে, এখানে কোন বস্তু মহাভাবদ্যোতক না হইলে তাহার কোন মূল্যই নাই । মৃত্যুর পর কি হইবে, তাহার যথার্থ তত্ত্ব নিরূপণ করিবার ইচ্ছা সাধারণতঃ গ্রীকদের মনে উদিত হয় নাই। এখানে কিন্তু এই প্রশ্ন প্রথম হইতেই বার বার জিজ্ঞাসিত হইয়াছে—আমি কি ? মৃত্যুর পর আমার কি অবস্থা হইবে ? গ্রীকদের মতে মানুষ মরিয়া স্বর্গে যায়। স্বর্গে যাওয়ার অর্থ কি ?—সব কিছুর বাহিরে যাওয়া, ভিতরে নয়—কেবল বাহিরে ; তাহার লক্ষ্য কেবল বাহিরের দিকে, শুধু তাই নয়, সে নিজেও ষে নিজের বাহিরে। আর যখন সে এমন এক স্থানে গমন করিতে পারিবে, যাহা অনেকটা এই জগতেরই মতে, অথচ যেখানে এখানকার দুঃখগুলি নাই, তখনই সে ভাবিল, যাহা কিছু তাহার প্রার্থনীয়, সে সব পাইল, পার্থিবদুঃখবজিত সুখ লাভ করিল, অমনি সে তৃপ্ত হইল – তাহার ধর্ম আর ইহার উপর উঠিতে পারিল না । হিন্দুদের মন কিন্তু ইহাতে তৃপ্ত হয় নাই। হিন্দুমনের বিচারে স্বৰ্গও স্থূল জগতের অন্তর্গত। হিন্দুরা বলেন, যাহা কিছু সংযোগোৎপন্ন, তাহারই বিনাশ অবশুম্ভাবী। র্তাহারা বহিঃপ্রকৃতিকে প্রশ্ন করিলেন, ‘তুমি জানো আত্মা কি ? উত্তর আসিল । —‘না। ঈশ্বর আছেন কি ?’ প্রকৃতি উত্তর দিল—‘জানি না "তাহারা তখন