পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ON 8 স্বামীজীর বাণী ও রচনা একজন ক্ষুদ্র বুদ্ধ দমাত্র বিবেচিত ੱਚ পারে এবং অপরে পর্বততুল্য বৃহৎ তরঙ্গ হইতে পারে, কিন্তু উভয়েরই পশ্চাতে অনন্ত সমুদ্র রহিয়াছে। অতএব সকলেরই আশা আছে, সকলেরই জন্য মুক্তির দ্বার উন্মুক্ত, সকলেই শীঘ্র বা বিলম্বে মায়ার বন্ধন হইতে মুক্ত হইবে। ইহাই আমাদের প্রথম কর্তব্য। অনন্ত আশা হইতে অনন্ত আকাজক্ষা ও চেষ্টার উৎপত্তি হয়। যদি সেই বিশ্বাস আমাদের ভিতরে আবির্ভূত হয়, তবে উহা আমাদের জাতীয় জীবনে ব্যাস ও অজুনের যুগ লইয়া আসিবে, যে যুগে সমগ্র মানবজাতির কল্যাণকর উচ্চ মতবাদসমূহ প্রচারিত হইয়াছিল। আজকাল আমরা অন্তদৃষ্টি ও আধ্যাত্মিক চিস্তায় অনেক পিছনে পড়িয়াছি, কিন্তু এখনও ভারতে যথেষ্ট আধ্যাত্মিকতা আছে, এত অধিক আছে যে, আধ্যাত্মিক মহত্ত্বই ভারতকে জগতের বর্তমান জাতিসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জাতি করিয়াছে। যদি জাতীয় ঐতিহ্য ও আশার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা যায়, তবে সেই গৌরবময় দিনগুলি আমাদের আবার ফিরিয়া আসিবে, আর উহা তোমাদের উপরেই নির্ভর করিতেছে । বঙ্গীয় যুবকগণ, তোমরা ধনী ও বড় লোকের মুখ চাহিয়া থাকিও না ; দরিদ্রেরাই পৃথিবীতে চিরকাল মহৎ ও বিরাট কার্যসমূহ সাধন করিয়াছে। হে দরিদ্র বঙ্গবাসিগণ, ওঠ, তোমরা সব করিতে পারো, আর তোমাদিগকে সব করিতেই হইবে। যদিও তোমরা দরিদ্র, তথাপি অনেকে তোমাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবে। দৃঢ়চিত্ত হও ; সর্বোপরি পবিত্র ও সম্পূর্ণ অকপট হও ; বিশ্বাস কর যে, তোমাদের ভবিষ্যৎ অতি গৌরবময় । বঙ্গীয় যুবকগণ, তোমাদের দ্বারাই ভারতের উদ্ধার সাধিত হইবে তোমরা বিশ্বাস কর বা না কর, উহা বিশেষভাবে লক্ষ্য করিও । মনে করিও না—আজ বা কালই উহা হইয় যাইবে। আমি যেমন আমার দেহ ও আমার আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাসী, সেইরূপ দৃঢ়ভাবে ইহাও বিশ্বাস করিয়া থাকি। সেই জন্য হে বঙ্গীয় যুবকগণ, ' তোমাদের প্রতি আমার হৃদয় আকৃষ্ট । তোমাদের টাকা কড়ি নাই ; তোমাদেরই উপর ইহা নির্ভর করিতেছে ; যেহেতু তোমরা দরিদ্র, সেইজন্যই তোমরা কাজ করিবে। যেহেতু তোমাদের কিছুই নাই, সেহেতু তোমরা অকপট হইৰে । অকপট বলিয়াই তোমরা সর্বত্যাগের জন্য প্রস্তুত হইবে। একথাই আমি তোমাদিগকে এইমাত্র বলিতেছিলাম। আবার তোমাদিগের নিকট। উল্লেখ করিতেছি-ইহাই তোমাদের জীবনব্রত, ইহাই আমার জীবনব্রত।