পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমাদের জন্মপ্রাপ্ত ধর্ম Wう。 বেশ্বাপুত্ৰ বশিষ্ঠ, ধীবরতনয় ব্যাস, দাসীপুত্ৰ নারদ প্রভৃতি সকলেই ঋষিপদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। প্রকৃত উপায়ে এই ধর্মের সাক্ষাৎকার হইলে আর কোন ভেদ’থাকে না । পুর্বোক্ত ব্যক্তিগণ যদি ঋষি হইয়া থাকেন, তবে হে আধুনিক কালের কুলীন ব্রাহ্মণগণ, তোমরা আরও কত মহান ঋষি হইতে পারে! সেই ঋষিত্বলাভের চেষ্টা কর, জগং তোমাদের নিকট স্বতই নত হইবে । এই বেদই আমাদের ঐকমাত্র প্রমাণ, আর ইহাতে সকলেরই অধিকার। যথেমাং বাচং কল্যাণীমাবদানি জনেভ্যঃ । ব্রহ্মরাজন্তাভ্যাং শূদ্রায় চার্যায় চ স্বায় চারণায় ॥’ –এই বেদ হইতে এমন কোন প্রমাণ দেখাইতে পারো যে, ইহাতে সকলের অধিকার নাই ? পুরাণ বলিতেছে, বেদের অমুক শাখায় অমুক জাতির অধিকার, অমুক অংশ সত্যযুগের, অমুক অংশ কলিযুগের জন্য। কিন্তু বেদ তো এ-কথা বুলিতেছেন না । ভৃত্য কি কখন প্রভুকে আজ্ঞা করিতে পারে ? স্মৃতি, পুরাণ, তন্ত্র—এই সবগুলিরই ততটুকু গ্রাহা, যতটুকু বেদের সহিত মিলে ; না মিলিলে অগ্রাহ । কিন্তু এখন আমরা পুরাণকে বেদের অপেক্ষ উচ্চতর আসন দিয়াছি । বেদের চর্চা তো বাঙলাদেশ হইতে লোপই পাইয়াছে। আমি শীঘ্র সেইদিন দেখিতে চাই, ঘে-দিন প্রত্যেক বাটীতে শালগ্রামশিলার সহিত বেদও পূজিত হইবে, আবালবৃদ্ধবনিতা বেদের পুজা করিবে । বেদ সম্বন্ধে পাশ্চাত্য পণ্ডিতদিগের মতে অপমার কোন আস্থা নাই | র্তাহারা বেদের কাল-আজ এই নির্ণয় করিতেছেন, আগামী কাল উহা বদলাইয়া সহস্ৰ বৎসর পিছাইয়া দিতেছেন। যাহা হউক, পূর্বে যেমন বলিয়াছি, পুরাণের যতটুকু বেদের সহিত মিলে, ততটুকুই গ্রাহ । পুরাণে অনেক কথা দেখিতে পাই, যেগুলি বেদের সহিত মিলে না । যথা, পুরাণে লিখিত আছে— কেহ দশ সহস্ৰ, কেহ বা বিশ সহস্ৰ বংসর জীবিত রহিয়াছেন, কিন্তু ,বেদে দেখিতে পাই, শতায়ূর্বৈ পুরুষঃ”—এখানে বেদের কথুই গ্রাহ । তাহা হইলেও পুরাণে যোগ ভক্তি জ্ঞান কর্মের অনেক স্বন্দর স্বন্দর কথা আছে, সেগুলি অবশু লইতে হইবে । - তারপর তন্ত্র । তন্ত্র-শব্দের প্রকৃত অর্থ শাস্ত্র’, যেমন ‘কপিল তন্ত্ৰ’ । কিন্তু এখানে তন্ত্ৰ-শব্দ আমি উহার বর্তমান প্রচলিত সঙ্কীর্ণ অর্থে ব্যবহার করিতেছি । > শুক্লধ্বজুৰ্বে, মাধ্যুদিন শাখা, ২৬ অধ্যায়, ২ মন্ত্র