পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\s a g স্বামীজীর বাণী ও রচনা থাকি, সে গৌরব অামার নয়, তোমাদের । আবার দুর্বলতা ও ব্যর্থতা—সবই আমার ব্যক্তিগত, সে-সবই এ দেশবাসীকে যে মহতী ভাবধারা আজন্ম ধারণ করিয়া রাখে, তাহা দ্বারা সমৃদ্ধ হইবার শক্তির অভাববশতঃ । - আর কী দেশ ! বিদেশী অথবা স্বদেশী, যে-কেহ এই পূবিত্রভূমিতে মাসিয়া দাড়াইবে—যদি তাহার মন পশুস্তরে অধঃপতিত না হইয়া থাকে, তাহা হইলে ইতিহাসের বিস্মৃত অতীত হইতে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও পবিত্রতম যে-সন্তানের পশুসত্তাকে দিব্যসত্তায় উন্নীত করিবার সাধনা করিয়া গিয়াছেন, তাহদের জীবন্ত চিন্তারাশি দ্বারা নিজেদের পরিবৃত্ব,অনুভব করিবেন। সমগ্র বায়ুমণ্ডল অধ্যাত্মিকতায় স্পন্দিত হইতেছে । দর্শন, নীতিশাস্ব ও আধ্যাত্মিকতা –যা কিছু মাহুষের অন্তর্নিহিত পশুসত্তা রক্ষা করিবার নিরস্তর প্রচেষ্টায় বিরতি আনিয়া দেয়, যে-সকল শিক্ষণ মানুষকে পশুত্বের আবরণ অপস্থত করিয়া জন্মমৃত্যুহীন চিরপবিত্র অমব আত্মা-রূপে প্রকাশিত হইতে সাহায্য করে---এই দেশ সেই-সব কিছুরই পুণ্যভূমি । এই দেশ-যেখানে আনন্দের পাত্রটি পরিপূর্ণ হইয়া উঠিয়ছিল, বেদনায় পাত্রটি পূর্ণতর হইলে অবশেষে এইখানেই মানুষ সর্বপ্রথম উপলব্ধি করিল -এ সবই আসার ; এখানেই যৌবনের প্রথম স্বচনায়, বিলাসের ক্রোড়ে, গৌরবের সমুচ্চ শিখরে, ক্ষমতার অজস্র প্রাচুর্যের মধ্যে মানুষ মায়ার শৃঙ্খল চূৰ্ণ করিয়া বাহির হইয়াছে। এইখানে এই মানবতা-সমুদ্রে স্থখদু:খ, সবলতা ও দুর্বলতা, ধন-দারিদ্র্য, আনন্দ-বেদন, হাসি-অশ্রু, জন্ম-মৃত্যুর তীব্র স্রোত-সংঘাতে, অনন্ত শান্তি ও স্তব্ধতার বিগলিত ছন্দের আবর্তনে উখিত হয়, বৈরাগ্যের সিংহাসন ! এই দেশেই জন্মমৃত্যুর মহাসমস্তাসকল—জীবন-তৃষ্ণ, এ-জীবনের জন্য ব্যর্থ উন্মাদ প্রচেষ্টার ফলে সঞ্চিত দুঃখরাশি—সর্বপ্রথম আয়ত্তে আনিয়া সমাধান করা হয়, এমন সমাধান অতীতে কখনও হয় নাই বা ভবিষ্যতে কখনও হইবে না ; * এইখানেই সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত হয় যে, এই জীবনটাই অনিত্য—যাহা পরমসত্য, তাহারই ছায়ামাত্র । এই একটি দেশ, যেখানে ধর্ম বাস্তব সত্য, এইখানেই নরনারী সাহসের সঙ্গে অধ্যাত্ম-লক্ষ্যে উপনীত হইবার জন্য বাপ দেয়, ঠিক যেমন অন্যান্য দেশে দরিদ্র ভ্রাতারে বঞ্চিত করিয়া নরনারী জীবনের মুখসামগ্রীর জন্য উন্মাদের মতো বাপ দেয়। এইখানেই মানব-হৃদয়-পশুপক্ষী, তরুলতা, মহত্তম দেবগণ কুইতে ধূলিকণা অবধি, উচ্চতম হইতে নিম্নতম সত্তা পর্যন্ত