পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V3切rbr স্বামীজীর বাণী ও রচনা সাধারণ মানুষ তখন ধর্মের প্রাণহীন আচার-অনুষ্ঠানে ক্লান্ত এবং দার্শনিক ব্যাখ্যার জটিলতায় বিভ্রান্ত ; কাজেই তাহারা দলে দলে এই জড়বাদীদের সঙ্গে যোগ দিয়াছিল । শ্রেণীগত সমস্যার সূচনা তখন হইতেই, এবং ভারতভূখণ্ডে আনুষ্ঠানিক ধর্ম, দার্শনিকতা ও জড়বাদের মধ্যে যে ত্ৰিমূগী বিরোধ আরম্ভ হইয়াছিল, তাহা আজ পর্যন্ত অমীমাংসিত রহিয়। গিয়াছে। এ বিরোধের প্রথম সমাধান-প্রচেষ্টা শুরু হয় ভাব-সমীকরণের সূত্র অনুসরণ করিয়া, যাহা স্মরণাতীত কাল হইতে জনসাধারণকে একই সত্য বিভিন্নভাবে দেখিতে শিখাইয়ছিল । * * এই চিন্তাধারার মহান নেতা ক্ষত্রিয় শ্ৰীকৃষ্ণ স্বয়ং। তাঁহারই উপদেশ শ্ৰীমদ্ভগবদগীতা । জৈন, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য বহু সম্প্রদায়ের অভু্যত্থানের ও বিপর্যয়ের পর অবশেষে শ্ৰীকৃষ্ণ অবতাররূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছিলেন এবং যথার্থ জীবনদর্শন-রূপে গীত স্বীকৃতি লাভ করিয়াছিল । বর্ণাধিকারে শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করিবার জন্য রাজন্তবর্গের যে দাবি এবং পুরোহিতকুলের বিশেষ সুযোগ-সুবিধার বিরুদ্ধে জনসাধারণের বিক্ষোভ-জনিত যে উত্তেজনা, তাহ সাময়িকভাবে প্রশমিত হইলেও তাহার মূলীভূত হেতু যে সামাজিক বৈষম্য, তাহ তখনও দূর হইল না, রহিয়াই গেল । শ্ৰীকৃষ্ণ জাতিনিবিশেষে সকলের সম্মুখে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত করিয়ছিলেন সত্য, কিন্তু সামাজিক ক্ষেত্রে অনুরূপ সমস্ত তিনি স্পশ করেন নাই | সকলের সামাজিক সাম্যের জন্য বৌদ্ধ বৈষ্ণব প্রভৃতি সম্প্রদায়ের বিপুল সংগ্রাম সত্ত্বেও সেই অমীমাংসিত সমস্ত আমাদের কাল পর্যন্ত আসিয় পৌঁছিয়াছে। { তাই দেখা যায়, বর্তমান কালের ভারতবর্ষে মানুষের আধ্যাত্মিক সমত। স্বীকৃত হইলেও সামাজিক বৈষম্য দৃঢ়ভাবে রক্ষিত হইতেছে। আমরা দেখিতে পাই, সেই সামাজিক বৈষম্যের বিরোধ খ্ৰীষ্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে নূতন শক্তি লইয়া আত্মপ্রকাশ করিয়াছিল, খ্ৰীষ্টপূর্ব যষ্ঠ শতাব্দীতে শাক্যমুনি বুদ্ধদেবের নেতৃত্ব প্রাচীন, আচার-ব্যবস্থাদি একেবারে অভিভূত করিয়া ফেলিয়াছিল। ' সেই সময় বিশেষ-অধিকারভোগী পুরোহিতবর্গের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় বৌদ্ধগণ প্রাচীন বৈদিক আচার-অনুষ্ঠানের প্রত্যেকটি খুটিনাটি পর্যন্ত দূরে নিক্ষেপ করিয়াছিল, বৈদিক দেবতাদিগকে বৌদ্ধাচার্যগণের ভৃত্যশ্রেণীতে অবনমিত করিয়াছিল ; সেই সঙ্গে এই কথা ঘোষণা করিয়াছিল যে, ‘শ্রষ্টা’