পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের ঐতিহাসিক ক্রমবিকাশ \రిఫెడి তিনি সম্পূর্ণ অগ্রাহ করিলেন, সর্বসাধারণের কথ্যভাষাই ছিল তাহার প্রচারের ভাষা । ফলে জনসাধারণকে বৈদিক ধর্মের আবেষ্টনীতে ফিরাইয়া অানিতে রামাম্বুজ সম্পূর্ণভাবে সফল হইয়াছিলেন । উত্তরাঞ্চলে সে প্রতিক্রিয়ার পরেই মালব সাম্রাজ্যের সাময়িক গৌরবদীপ্তি দেখা দিয়াছিল। কিন্তু অতি অল্পকাল মধ্যেই তাহার অবসান ঘটিলে উত্তরভারত যেন দীর্ঘকালের জন্য গাঢ় নিদ্রায় আচ্ছন্ন হইল। আর সে-নিদ্রা রূঢ়ভাবে ভাঙিয়াছিল আফগানিস্তানের গিরিবত্ম দিয়া সবেগে সম্মুখে ধাবমান মুসলমান অশ্বারোহি-দলের বজ্রনিনাদে । যাহা হউক, দক্ষিণাঞ্চলে শঙ্কর ও রামাতুজের অভু্যদয়ের পরই এ-দেশের স্বাভাবিক নিয়মানুসারে একতাবদ্ধ জাতি ও শক্তিশালী সাম্রাজ্যের উদ্ভব হইয়াছিল । কাজেই দক্ষিণভারতই তখন ভারতীয় ধর্ম ও সংস্কৃতির আশ্রয়ভূমি হইয়া উঠিয়াছিল ; আর, এক সমুদ্রতীর হইতে অন্য সমুদ্রতীর পর্যন্ত বিস্তৃত সমগ্র উত্তর-ভারত—মধ্য-এশিয়ার বিজেতাদের পাদমূলে শৃঙ্খলাবদ্ধ হইয়া পড়িষাছিল । দক্ষিণভারতকে পদানত করিবার জন্য মুসলমানগণ শতাব্দীর পর শতাব্দী চেষ্টা করিয়াছিল, কিন্তু সে-অঞ্চলের কোথাও একটি শক্ত ঘাটিও স্থাপন করিতে পারে নাই । বস্তুতঃ সঙ্ঘবদ্ধ ও শক্তিশালী মোগল সাম্রাজ্যের দক্ষিণবিজয় যখন প্রায় সমাপ্তির মুখে, ঠিক তখনই সেই ভূখণ্ডের পার্বত্য প্রদেশ হইতে, মালভূমির নানাপ্রাস্ত হইতে কৃষকগণ অশ্বারোহী যোদ্ধ বেশে দলে দলে কাতারে কাতারে রণক্ষেত্রে বাপাইয়া পড়িয়াছিল। রামদাস-প্রচারিত, তুকারামসমুদ্রগীত ধর্মের জন্য তাহার প্রাণ বিসর্জন দিতে কৃতসঙ্কল্প ; এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিশাল মোগল সাম্রাজ্য নামমাত্রে পর্যবসিত হইল । মুসলমানযুগে উত্তরভারতে বিজয়ী জাতির ধর্মে দীক্ষা-গ্রহণ হইতে জনসাধারণকে নিবৃত্ত রাখাই ছিল সকল আন্দোলনের মুখ্য প্রয়াস ; তাহারই ফলে সে-সময়ে ধর্মজগতে এবং সমাজ-ব্যবস্থায় সমানাধিকারের ভাব দেখা দিয়াছিল। রামানন্দ, কবীর, দাদু, শ্রীচৈতন্য বা নানক এবং তাহাদের সম্প্রদায়ভুক্ত সাধুসন্তগণ দার্শনিক বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতাবলম্বী হইলেও মানুষের সম-অধিকারপ্রচারে সকলে একমত ছিলেন। সাধারণের মধ্যে ইসলামের অতি দ্রুত অকুপ্রবেশ রোধ করিতেই ইহাদের অধিকাংশ শক্তি ব্যয়িত হুইয়াছে ; কাজেই