পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 రి স্বামীজীর বাণী ও রচনা বিবেকানন্দ দোকানদারি মনোবৃত্তি’ আখ্যা দিয়াছেন, তাহার, প্রতি প্রাচ্যদেশীয়গণের ঘৃণার কারণ বুঝিতে পারিবেন। ; বিষয়টি ধর্মপ্রচারকদের পক্ষে আদেী উপেক্ষণীয় নয়। র্যাহার পৌত্তলিক প্রাচ্য জগৎকে ধর্মান্তরিত করিতে চান, পার্থিব জগতের সাম্রাজ্য এবং বৈভবকে ঘূণাসহকারে পরিহারপূর্বক তাহাদিগকে নিজ-প্রচারিত ধর্মাতুযায়ী জীবন যাপন করিতে হইবে । ভ্রাতা বিবেকানন্দ নৈতিক দিক হইতে ভারতকে সর্বাপেক্ষা উন্নত দেশ বলিয়া মনে করেন । পরাধীনতা সত্ত্বেও ভারতের আধ্যাত্মিকতা অক্ষুণ্ণ রহিয়াছে । ডেট্রয়েটে প্রদত্ত র্তাহার বক্তৃতা-সম্পর্কে প্রকাশিত কয়েকটি বিবরণীর অংশবিশেষ এখানে প্রদত্ত হইল : নিরহঙ্কার-ভাবই পুণ্য এবং সকল প্রকার অহংভাবই পাপ--এই মর্মে ভারতীয়দের যে-বিশ্বাস বর্তমান, এইখানে তাহা উল্লেখ করিয়া বক্তা তাহার আলোচনার মূল নৈতিক স্বরটি ধ্বনিত করেন। গত সন্ধ্যার বক্তৃতায় উক্ত ভাবেরই প্রাধান্য অনুভূত হয় এবং ইহাকেই তাহার বক্তৃতার সারমর্ম বলা যাইতে পারে । হিন্দু বলেন, নিজের জন্য গৃহ নিৰ্মাণ করা স্বার্থপরতার কাজ, সেই জন্য তিনি উহা ঈশ্বরের পুজা ও অতিথিসেবার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করেন । নিজের উদরপূর্তির জন্য আহার্য প্রস্তুত করা স্বার্থপরতার কাজ, সুতরাং দরিদ্রনারায়ণ-সেবার জন্য আহার্য প্রস্তুত করা হয় । ক্ষুধার্ত অতিথির আবেদন পূর্ণ করিবার পর হিন্দু স্বয়ং অন্নগ্রহণে প্রবৃত্ত হন । এই মনোভাব দেশের সর্বত্র প্রকট। যে-কোন ব্যক্তি গৃহস্থের নিকট আসিয়া আহার ও আশ্রয় প্রার্থনা করিতে পারে এবং সকল গৃহের দ্বারই তাহার জন্য উন্মুক্ত থাকে। জাতিভেদ-প্রথার সহিত ধর্মের কোনও সম্পর্ক নাই। কোন ব্যক্তি তাহার বৃত্তি প্রাপ্ত হয়—উত্তরাধিকারসূত্রে ; সূত্রপার স্বত্রধার-রূপেই জন্মগ্রহণ করে, স্বর্ণকার স্বর্ণকার-রূপেই, শ্রমিক শ্রমিক-রূপেই এবং পুরোহিত পুরোহিত-রূপেই । দুই প্রকার দান বিশেষ প্রশংসার্হ, বিদ্যাদান আর প্রাণদান । বিদ্যাদানের স্থান সর্বাগ্রে । অপরের জীবন রক্ষা করা উত্তম কর্ম, বিদ্যাদান অধিকতর উত্তম কর্ম। অর্থের বিনিময়ে শিক্ষাদান পাপ, পণ্যের ন্যায় অর্থের বিনিময়ে যিনি বিদ্যা বিক্রয় করেন, তিনি নিদাৰ্হ। সরকার মধ্যে মধ্যে এই-সকল শিক্ষাদাতাকে