পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8)や স্বামীজীর বাণী ও রচনা কেন—তুমি একজন বড় দার্শনিক, আরও বড় ঈশ্বর-তত্ত্বজ্ঞ হতে পারে—তবু একটি হিন্দু বালক বলবে ওব সঙ্গে ধর্মের কিছু সম্বন্ধ নেই। আত্মাকে আত্মস্বরূপে চিন্তা করতে পারে ? তা হ’লে সকল সংশয়ের শেষ, তা হলেই মনের সব বঁকাচোরা সোজা হয়ে যাবে । জীবাত্মা ( মানুষ ) যখন পরমাত্মার ( ঈশ্বরের ) সন্মুখীন হয়, তখনই সব ভয় শূন্যে মিলিয়ে যায়, সব সন্দিগ্ধ চিন্ত৷ চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যায় । পাশ্চাত্যের বিচারে একজন অদ্ভুত বিদ্বান হ’তে পারেন, তবু তিনি হয়তে ধর্ম বিষয়ে ‘অ, আ, ক, খ" না জানতে পারেন । আমি তাকে তাই ব’লব । জিজ্ঞাসা করব, আপনি কি আত্মাকে আত্মা ব’লে ভাবতে পারেন ? আপনি কি আত্ম-বিষয়ক বিজ্ঞানে পারদর্শী ? আপনি জডের উর্ধের্ব নিজ আত্মাকে বিকশিত করেছেন ? যদি তা না ক’রে থাকেন, তা হ’লে তাকে ব’লব, আপনার ধর্ম লাভ হয়নি, যা হয়েছে তা শুধু কথা, শুধু বই, শুধু বৃথা গর্ব ? আর ঐ হতভাগ্য’ হিন্দুটি মূর্তির সামনে বসে দেবতার সঙ্গে তাদাত্মা চিন্ত৷ করবার চেষ্টা ক’রে শেষে বলে, “হে ঈশ্বর, পারলাম না তোমায় আত্মস্বরূপে ধারণা করতে, অতএব এই সাকার মূর্তিতেই তোমায় চিন্ত| করি । তখন সে চোখ খোলে, ঈশ্বরের রূপ প্রত্যক্ষ কবে, প্রণাম ক’রে বার বার প্রার্থনা করে । প্রার্থনার শেষে আবার বলে, “হে ঈশ্বব, আমায় ক্ষমা করে, তোমার এই অসম্পূর্ণ পুজার জন্য ।” তোমরা কেবল শুনে আসছ, হিন্দুরা পাথর পুজা করে । তাদের অস্তরের প্রকৃতি সম্বন্ধে তোমরা কি ভাবো ? এই দেখ, আমি হচ্ছি ইতিহাসে প্রথম হিন্দু সন্ন্যাসী, যে সমুদ্র পেরিয়ে এই পাশ্চাত্য দেশে এসেছে। এসে অবধি শুনছি, তোমাদের সমালোচনা, তোমাদের ঐ-সব কথা ! তোমাদের সম্বন্ধে আমার দেশের লোকের ধারণা কি ? তার হাসে আর বলে, ‘ওরা শিশু ; প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে ওরা বড় হ’তে পারে, প্রকাণ্ড প্রকাও জিনিস ওরা তৈরি করতে পারে, কিন্তু ধর্ম-ব্যাপারে ওরা একেবারে শিশু ! এই হ’ল তোমাদের সম্বন্ধে আমার দেশের লোকের ধারণা । একটি কথা তোমাদের ব’লব, কোন নিষ্ঠুর সমালোচনা করছি না ! তোমরা কতকগুলি মানুষকে শিক্ষিত কর, খেতে দাও, পরতে দাও, মাইনে দাও—কি কাজের জন্য ? তারা আমার দেশে এসে-আমার পুর্বপুরুষদের, অভিসম্পাত