পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\} о স্বামীজীর বাণী ও রচনা আগামীকালই হয়তো মৃত্যুমুখে পতিত হইবে—সে যদি আসিয়া আমাকে আমার অনেক দিনের সংকল্পিত বিষয়গুলি পরিত্যাগ করিতে বলে এবং আমিও যদি সেই শিশুর কথা শুনিয়া তাহার মতানুসারে আমার কার্যপ্রণালীর পরিবর্তন করি, তবে আমিই আহাম্মক হইলাম, অপর কেহ নহে। ভারতের বাহিরে নানাদেশ হইতে আমরা সমাজ-সংস্কার সম্বন্ধে যে-সকল উপদেশ পাইতেছি, তাহারও অধিকাংশ ঐ ধরনের । তাহাদিগকে বলো—তোমরা যখন একটি স্থায়ী সমাজ গঠন করিতে পারিবে, তখন তোমাদের কথা শুনিব । তোমর ছুদিন একটা ভাব ধরিয় রাখিতে পার না, বিবাদ করিয়া উহা ছাড়িয়া দাও ; ক্ষুদ্র পতঙ্গের ন্যায় তোমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী! বুদ্ধদের দ্যায় তোমাদের উৎপত্তি, বুদ্ধদের ন্যায় লয়! আগে আমাদের মতে স্থায়ী সমাজ গঠন কর; প্রথমে এমন কতক গুলি সামাজিক নিয়ম ও প্রথার প্রবর্তন কর, যেগুলির শক্তি শত শত শতাব্দী পরিয়া অব্যাহত থাকিতে পারে —তখন তোমাদের সহিত এ বিষয়ে আলোচনা করিবার সময় হইবে । কিন্তু যতদিন না তাহা হইতেছে, ততদিন তোমরা চঞ্চল বালকমাত্র । আমাদের ধর্ম সম্বন্ধে আমার যাহা বলিবার ছিল, তাহ বলা শেষ হইয়াছে । এখন আমি বর্তমান যুগের যাহা বিশেষ প্রয়োজন, এমন একটি বিষয় তোমাদিগকে বলিব ! মহাভারত-কার বেদব্যাসের জয় হউক । তিনি বলিয়া গিয়াছেন, কলিযুগে দানই একমাত্র ধর্ম । অন্যান্য যুগে যে-সকল কঠোর তপস্যা ও যোগাদি প্রচলিত ছিল, তাহা আর এখন চলিবে না। এ যুগে বিশেষ প্রয়োজন দান—অপরকে সাহায্য করা। দান শব্দে কি বুঝায় ? ধর্মদানই শ্রেষ্ঠ দান, তারপর বিদ্যাদান, তারপর প্রাণদান ; অন্নবস্থদান সর্বনিয়ে। যিনি ধৰ্মজ্ঞান প্রদান করেন, তিনি আত্মাকে অনস্ত জন্ম-মৃত্যু-প্রবাহ হইতে রক্ষা করিয়৷ থাকে । যিনি বিদ্যাদান করেন, তিনিও অধ্যাত্মিক জ্ঞানলাভের সহায়তা করেন । অন্যান্য দান, এমন কি প্রাণদান পর্যন্ত তাহার তুলনায় অতি তুচ্ছ । অতএব তোমাদের এইটুকু জানা উচিত যে, এই আধ্যাত্মিক জ্ঞানদান অপেক্ষা অন্যান্য সব কাজ নিম্নস্তরের। আধ্যাত্মিক জ্ঞান বিস্তার করিলেই মনুষ্যজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্য করা হয় । আমাদের শাস্ত্র আধ্যাত্মিক ভাবের অনন্ত উৎস · এই ত্যাগের দেশ-ভারত ব্যতাত পৃথিবীতে আর কোথায়, ধর্মের অপরোক্ষানুভূতির এরূপ দৃষ্টান্ত পাইবে ? পৃথিবী সম্বন্ধে আমার একটু