পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3V2 ο * স্বামীজীর বাণী ও রচনা অংশের সমষ্টিরূপ। ব্যষ্টির ক্ষেত্রে যেমন, জাতির ক্ষেত্রেও সেইরূপ । প্রত্যেক জাতিকেই একটি ভূমিকা অভিনয় করিতে হয় ; প্রত্যেক জাতিকে মানব স্বভাবের একটি দিক বিকশিত করিতে হয় ; এবং আমাদিগকে এই সমস্তই একসঙ্গে গ্রথিত করিতে হইবে । সম্ভবতঃ সুদূর ভবিষ্যতে এমন এক জাতির উদ্ভব হইবে, যে-জাতির ভিতর বিভিন্ন জাতিদ্বারা অর্জিত বিস্ময়কর পুর্ণতা প্রকাশিত হইবে এবং উহা আর একটি নূতন জাতিরূপে দেখা দিবে। এই জাতির মতো একটি জাতির কথা মানুষ এখনও কল্পনা করিতে পারে নাই । এইটুকু বলা ছাড়া কাহারও সমালোচনা করিয়া আমার বলিলার কিছু নাই। জীবনে ভ্রমণ বড় কম করি নাই। সর্বদা আমার চক্ষু খুলিয়া রাখিয়াছি এবং যতই আমি ঘুরি, ততই আমার মুখ বন্ধ হইয়া যায়, সমালোচনা করিতে আর পারি না । এখন ‘ভারতীয় নারী’র প্রসঙ্গ। ভারতে জননীই আদর্শ নারী । মাতৃভাবই প্রথম ও শেষ কথা । ‘নারী’-শব্দ হিন্দুর মনে মাতৃত্বকেই স্মরণ করাইয়া দেয়। ভারতে ঈশ্বরকে ‘মা’ বলিয়া সম্বোধন করা হয় । আমাদের শৈশবে প্রতিদিন প্রাতঃকালে একপাত্র জল লইয়া মায়ের কাছে রাখিতে হয় । তিনি তাহার পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ উহাতে ডুবাইয়া দেন এবং আমরা ঐ জল পান করি । পাশ্চাত্যে নারী জায়। সেখানে জায়ারূপেই নারীত্বের ভাবাট কেন্দ্রীভূত হইয়াছে। ভারতের সাধারণ মানুষের কাছে—নারীত্বের সমগ্র শক্তি মাতৃত্বে ঘনীভূত হইয়াছে। পাশ্চাত্যে স্ত্রীই গৃহকত্রী, ভারতীয় গৃহে কত্রী জননী । পাশ্চাত্যে গৃহে যদি মা আসেন, তবে তাহাকে ( ছেলের ) স্ত্রীর অধীন হইয় থাকিতে হইবে। ঘরকরন স্ত্রীর । মা সর্বদা আমাদের গৃহেই বাস করেন। স্ত্রীকে তাহার অধীনে থাকিতেই হইবে । ভাবের এই সব প্রভেদ আপনার লক্ষ্য করুন । আমি কেবল তুলনার প্রস্তাব করিতেছি। প্রকৃত তথ্য উল্লেখ করিতেছি, যুহাতে আমরা দুইদিকের তুলনা করিতে পারি। এই তুলনাটি করুন : যদি আপনার জিজ্ঞাসা করেন, ‘স্ত্রীরূপে ভারতীয় নারীর স্থান কোথায় ? এই প্রশ্নে ভারতবাসী প্রতিপ্রশ্ন করিবে, ‘জননীরূপে মার্কিন মহিলার মর্যাদা কি ? সেই সৰ্বমহিমময়ী, যিনি আমায় এই শরীর দিয়াছেন তিনি কোথায় ? নয় মাস যিনি আমাকে তার শরীরে ধারণ করিয়াছেন, তিনি কোথায়? কোথায়