পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8°8 স্বামীজীর বাণী ও রচনা আপনার ভাব। অস্বাস্থ্য লইয়া যাহার জন্ম, পাইকারী হারে গোটাকয়েক ঔষধের দোকান খাইলেও সে,কি সারাজীবন স্বস্থ থাকিতে পারিবে ? দুর্বল রুগুণ পিতামাতা, যাহাদের রক্ত দূষিত, তাহাদের সন্তান কয় জন স্থস্থ ও সবুল ? একজনও নয়! প্রবল শুভ বা অশুভ সংস্কার লইয়া হয় দেবতা, নয় দানবরূপে আমরা এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা বা আর সব কিছু অতি তুচ্ছ। আমাদের শাস্ত্র এইরূপ বলে : গর্ভকালীন প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ কর । জননীকে কেন পুজা করিতে হয় ? কারণ তিনি নিজেকে পবিত্র করিয়াছেন । পবিত্রতাস্বরূপিণী হইবার জন্য তিনি দুশ্চর তপস্যা করিয়াছেন। আপনার স্মরণ রাখিবেন, ভারতবর্ষে কোন নারী কোন পুরুষকে দেহ দান করার কথা ভাবিতেই পারেন না, দেহ তাহার নিজস্ব । যাহাকে দাম্পত্য অধিকারের পুনরুদ্ধার বলে, ইংরেজরা সমাজ-সংস্কার হিসাবে বর্তমানে ভারতবর্ষে তাহ প্রবর্তন করিয়াছে ; কিন্তু কোন ভারতবাসীই ঐ আইনের স্বযোগ গ্রহণ করিবে না । পুরুষ যখন নারীর দেহ-সম্পর্কে আসে, তখন নারী কত না প্রার্থনা ও ব্রতদ্বারা ঐ মিলনপরিবেশকে নিয়ন্ত্রিত করে । কারণ যে-পথে শিশুর আগমন, তাহ যে স্বয়ং ঈশ্বরের পবিত্রতম প্রতীক । ইহা স্বামী-স্ত্রীর মিলিত শ্রেষ্ঠ প্রার্থনা, যে-প্রার্থনা আর একটি প্রচণ্ড ভাল অথবা মন্দ শক্তির সম্ভাবনাযুক্ত একটি জীবকে এই জগতে লইয়া আসিতেছে। ইহা কি একটা হাসি-ঠাট্টার ব্যাপার ? ইহা কি শুধু ইন্দ্রিয়ের পরিতৃপ্তি ? ইহা কি দেহের পাশবিক সুখসম্ভোগ ? , হিন্দু বলে ‘না, না, সহস্রবার না ।” কিন্তু এইটির অনুগামী আর একটি ভাব আছে। সর্বংসহ সর্বক্ষমাশীলা জননীর প্রতি ভালবাসার আদর্শ লইয়া আমাদের আলোচনা আরম্ভ হইয়াছিল। জননীকে যে পুজা করা হয়, তাহার উৎস এইখানেই। আমাকে পৃথিবীতে আনিবার জন্য তিনি তপস্বিনী হইয়াছিলেন । আমি জন্মাইব বলিয়া তিনি বৎসরের পর বৎসর তাহার শরীর-মন, আহার-পরিচ্ছদ, চিন্তা-কল্পনা পবিত্র রাখিয়াছিলেন । এই জন্যই তিনি পুজনীয়। তারপর আমরা কোন ভাবটি পাই ? মাতৃত্বের সহিত সংযুক্ত হইয়া আছে জায়াভাব। - আপনার—পাশ্চাত্যদেশের লোকেরা–ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যপরায়ণ । আমি এই কাজটি করিতে চাই, যেহেতু আমি এটি পছন্দ করি। আমি সকলকে ধাক্কা দিয়া সরাইয়া দিব। কেন ? আমার খুশি । আমি নিজের পরিতৃপ্তি ভাই, সেইজন্য