পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8\* স্বামীজীর বাণী ও রচনা সংখ্যা নিম্নবর্ণের অপেক্ষ অধিক । তাই নিম্নবর্ণের অবস্থা ঠিক বিপরীত । নিম্নবর্ণের স্ত্রী-পুরুষ সকলে কঠিন পরিশ্রম করে। স্ত্রীলোকদের আরার একটু বেশী খাটিতে হয়, কারণ তাহদের ঘরের কাজও করিতে হয়। এই বিষয়ে আমার কোন চিন্তাই আসিত না, কিন্তু আপনাদেরই একজন মাকিন পর্যটক মার্ক টোয়েন ভারতবর্ষ সম্বন্ধে লিখিয়াছেন ; হিন্দু-আচার সম্বন্ধে পাশ্চাত্য সমালোচকরা যাহাই বলুক না কেন, আমি ভারতবর্ষে কোথাও দেখি নাই যে, লাঙ্গল টানিবার বলদের সঙ্গে বা গাড়ি টানিবার কুকুরের সঙ্গে স্ত্রীলোক জুতিয়া দেওয়া হইয়াছে, ইওরোপের কোন কোন দেশে যেমন করা হয়.। ভারতবর্ষে কোন স্ত্রীলোক বা বালিকাকে জমি চাষ করিতে দেখি নাই। রেলগাড়ি ধরিয়া দুই পাশে দেখিয়াছি যে, রোদে-পোড়া পুরুষ ও বালকের। খালি গায়ে জমি চষিতেছে ; কিন্তু একটি স্ত্রীলোকও চোখে পড়ে নাই । দুই ঘণ্টা রেল ভ্রমণের মধ্যে মাঠে কোন স্ত্রীলোক বা বালিকাকে কাজ করিতে দেখি নাই । ভারতবর্ষে নিম্নতম বর্ণের মেয়েরাও কোন কঠিন শ্রমসাধ্য কাজ করে না । অন্যান্য জাতির সমপর্যায়ের মেয়েদের তুলনায় তাহাদের জীবন অপেক্ষাকৃত আরামের ; হলকর্ষণ তাহারা কখনই করে না । এইবার দেখ । নিম্নবর্ণে পুরুষের সংখ্যা স্ত্রীলোকদের অপেক্ষ অধিক । এখন কি আশা কর ? পুরুষের সংখ্যা অধিক বলিয়া নারী বিবাহ করিবার অধিকতর সুযোগ পায় । g বিধবাদের বিবাহ না হওয়া প্রসঙ্গে : প্রথম দুই বর্ণের ভিতর স্ত্রীলোকের সংখ্যা অতিমাত্রায় অধিক ; এইজন্যই এই উভয় সুন্ধট—একদিকে বিধবাদের ' পুনর্বিবাহ না হওয়া জনিত সমস্যা ও দুঃখ, অন্যদিকে বিবাহযোগ্য৷ কুমারীদের স্বামী না পাওয়ার সমস্যা । কোন সমস্তাটির আমরা সম্মুখীন হইব—বিধবা-সমস্ত অথবা বয়স্কাকুমারী-সমস্ত ? এই দুইটির মধ্যে একটি লইতেই হইবে। এখন আস্বন, ভারতীয় মন সমাজতান্ত্রিক’—সেই মূল ভাবটিতে ফিরিয়া যাই । সমাজতান্ত্রিক ভারতবাসী বলে, “দেখ, আমরা বিধবা-সমস্তাটিকে ছোট মনে করি। কেন ? কারণ তাহাদের সুযোগ মিলিয়াছিল। তাহারা বিবাহিত হইয়াছিল। যদিও তাহারা সুযোগ হারাইয়াছে, তথাপি একবার তো তাহাদের । ভাগ্যে বিবাহ হইয়াছিল। স্বতরাং এখন শাস্ত হও এবং সেই ভাগ্যহীন কুমারীদের কথা চিন্তা কর—যাহারা বিবাহ করিবার স্বযোগ একবারও পায়