পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 Ջ স্বামীজীর বাণী ও রচনা g হইতে আসে, কারণ প্রত্যেকে সরকার ইইতে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি ভোগ করে। এই জমি একটি গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পত্তি, এবং পাচ দশ কুড়ি বা একশ-টি পরিবার একত্র ঐ জমি দখলে রাখিতে পারে। সমস্ত জমি তাহারাই নিয়ন্ত্রণ করে। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব তাহারা সরকারকে, দেয় এবং একটি চিকিৎসক এবং শিক্ষককে ভরণপোষণ করে, ইত্যাদি । আপনাদের ভিতর র্যাহার হারবার্ট স্পেন্সার পড়িয়াছেন, তাহাদের মনে আছে, তিনি তাহার শিক্ষাপদ্ধতিকে ‘মঠপদ্ধতি বলিয়াছেন । ইহা ইওরোপে প্রয়োগ করা হইয়াছে, কোথাও কোথাও সাফল্যমণ্ডিতও হইয়াছিল। এই পদ্ধতি অনুসারে গ্রামে একজন শিক্ষক থাকিবেন, তাহার ভার ঐ গ্রামকে লইতে হইবে । আমাদের এই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি অতি সাধারণ। কারণ আমাদের পদ্ধতিও অত্যন্ত সরল। প্রত্যেক বালক একটি ছোট মাদুরের আসন লইয়া আসে । তালপাতাতে লেখা আরম্ভ হয়, কারণ কাগজের দাম অনেক । প্রত্যেকটি বালক তাহার আসন বিছাইয়া বসে, দোয়াত ও পুস্তক সঙ্গে লইয়া আসে এবং লিখিতে আরম্ভ করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামান্য পাটীগণিত, কিছু সংস্কৃত ব্যাকরণ, একটু ভাষা ও হিসাব—এই শিক্ষা দেওয়া হয় । বাল্যকালে এক বৃদ্ধ আমাদের নীতিবিষয়ক একটি ক্ষুদ্র পুস্তক মুখস্থ করাইয়াছিলেন, উহার একটি শ্লোক এখনও আমার মনে আছে : “গ্রামের জন্য পরিবার, স্বদেশের জন্য গ্রাম, মানবতার জন্য স্বদেশ এবং জগতের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করিবে ।’ এইরূপ অনেক শ্লোক ঐ পুস্তকে আছে। আমরা ঐগুলি মুখস্থ করি, এবং শিক্ষক ব্যাখ্যা করিয়া দেন, পরে ছাত্রও ব্যাখ্যা করে । " বালক-বালিকার একত্রই এইগুলি শিক্ষা করে । ক্রমে তাহাদের শিক্ষা পৃথক হইয়া যায়। প্রাচীন সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি প্রধানতঃ ছাত্রদের জন্যই ছিল। ছাত্রীরা কদাচিৎ সেখানে যাইত। কিন্তু কিছু ব্যতিক্রমও ছিল । বর্তমানকালে ইওরোপীয় ধরনে উচ্চ শিক্ষার উপর অধিকতর ঝোক দেখ। দিয়াছে । মেয়েরাও এই উচ্চ শিক্ষালাভ করুক—এই দিকেই জনমত প্রবল হইতেছে । অবশ্য ভারতবর্ষে এমন লোকও আছে, যাহারা মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা ১ তাজেৎ কুলার্থে পুরুষং গ্রামস্তার্থে কুলং ত্যজেৎ । , গ্রামং জনপদস্তার্থে আত্মার্থে পৃথিবীং তাজেৎ ॥—মহাভারত, উদ্যোগ-পূর্ব, ৩৭১৭