পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

888 স্বামীজীর বাণী ও রচনা কাহাদের সহিত ? একজনকে যখন বলা হইল যে, বৃদ্ধদের সহিত এই বালিকাদের বিবাহ হয়, তখন সে বলিয়া উঠিল, যুবকেরা তাহা হইলে কি করে ? কি আশ্চর্য! বালিকাদের কি কেবল বৃদ্ধদের সহিতই বিবাহ দেওয়া হয় ? আমরা ৰে বৃদ্ধ হইয়াই জন্মগ্রহণ করি—বোধ হয় আমাদের দেশের সব লোকই ঐক্কপ । আত্মার মুক্তি ভারতবর্ষের আদশ। জগৎটা কিছুই নয়। উহা একটা দৃশু মাত্র, একটা স্বপ্ন। এই জীবন কোটি কোটি জীবনের মতো একটি। সমস্ত প্রকৃতিই মায়া, একটা ছায়া, ছায়ার আগার। ইহাই হইল ভারতীয় জীবন-দর্শন । শিশুরা জীবনকে অভিনন্দিত করে, ইহাকে মধুর ও সুন্দর বলিয়া মনে করে । কিন্তু কয়েক বছর পরেই যেখান হইতে তাহারা শুরু করিয়াছিল, তাহাদিগকে সেখানেই ফিরিয়া আসিতে হইবে । কঁদিতে কঁাদিতে জীবন আরম্ভ হইয়াছিল, কাদিতে কঁাদিতেই জীবন শেষ হইবে । যৌবন-মত্ত জাতিরাও ভাবে যে, তাহারা যাহা খুশি তাহাই করিতে পারে। তাহারা মনে করে, আমরাই পৃথিবীর অধিপতি—দেবতা, ভগবানের চিহ্নিত জাতি। তাহারা ভাবে ; সমগ্র জগৎকে শাসন করিবার, ঈশ্বরের পরিকল্পনা রূপায়িত করিবার, তাহাদের যাহা ইচ্ছা করিবার, পৃথিবীকে ওলট-পালট করিবার আদেশপত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যেন তাহাদিগকে দিয়াছেন ; হত্যা ও লুণ্ঠন করিবার ছাড়পত্র তাহারা পাইয়াছে । ভগবান তাহাদিগকে এই-সব স্বাধীনতা দিয়াছেন, শিশু বলিয়াই তাহারা এইসব অপকর্ম করে । " তাই সাম্রাজ্যের পর সাম্রাজ্যের আবির্ভাব হইয়াছে, তাহাদের কত মহিমা ও বর্ণচ্ছটা ! কিন্তু তাহারা বিস্কৃতির গর্ভে নিশ্চিহ্ন হইয়া গিয়াছে। হয়তো ধ্বংসস্তু পেই সেগুলি বিরাট! ' পদ্মপত্রে জলের ফোটা যেমন টলমল করিয়া মুহূর্তে পড়িয়া যায়, তেমনি এই নশ্বর , জীবন। যেদিকেই আমরা তাকাই, সেইদিকেই দেখি ধ্বংস । আজ যেখানে অরণ্য, এক সময়ে সেখানেই ছিল বড় বড় নগরীমণ্ডিত শক্তিশালী সাম্রাজ্য। ভারতীয় মানসের ইহাই হইল প্রধানতম চিন্তা ও মূল স্বর। আমরা জানি, আপনাদের পাশ্চাত্য জাতির শিরায় তরুণ রক্ত প্রবাহিত । আমরা জানি, মানুষের মতো জাতিরও স্বদিন আসে। কোথায় গ্রীম ? কোথায় রোম ? সেদিনের সেই শক্তিধর স্পেন কোথায় ? কে জানে এই-সব পরিবর্তনের মধ্য দিয়া ভারতের কি হইতেছে ? এইরূপেই জাতির জন্ম হয় এবং কালে তাদের ' ধ্বংস হয় ; এইভাবেই তাহাদের উত্থান ও পতন । যাহাদের দুধর্ধ সৈন্তবাহিনীকে -