পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 & o স্বামীজীর বাণী ও রচনা পুর্বোক্ত প্রস্থানত্রয় সকল সম্প্রদায়েরই প্রামাণ্য গ্রন্থ, কিন্তু প্রত্যেক সম্প্রদায়ই পৃথক পৃথক পুরাণ ও তন্ত্রকে প্রমাণরূপে গ্রহণ করিয়া থাকেন। আমরা পুর্বেই বলিয়াছি, তন্ত্রগুলি বৈদিক কর্মকাণ্ডেরই একটু পরিবর্তিত আকারমাত্র, আর কেহ উহাদের সম্বন্ধে হঠাৎ একটা অসম্বন্ধ সিদ্ধান্ত করিবার পুর্বেই তাহাকে আমি ব্রাহ্মণভাগ, বিশেষতঃ অধ্বযু-ব্রাহ্মণভাগের সহিত মিলাইয়া তন্ত্র পাঠ করিতে পরামর্শ দিই , তাহা হইলে তিনি দেখিবেন, তন্ত্রে ব্যবহৃত অধিকাংশ মন্ত্রই অবিকল ব্রাহ্মণ হইতে গৃহীত। ভারতবর্ষে তন্ত্রের প্রভাব কিরূপ, জিজ্ঞাসা করিলে বলা যাইতে পারে, শ্রেীত বা স্মার্জ কর্ম ব্যতীত হিমালয় হইতে কন্যাকুমারী পর্যস্ত সমুদয় প্রচলিত কর্মকাণ্ডই তন্ত্র হইতে গৃহীত, আর উহা শাক্ত, শৈব, বৈষ্ণব প্রভৃতি সকল সম্প্রদায়েরই উপাসনাপ্রণালীকে নিয়মিত করিয়া থাকে । অবশ্ব আমি এ কথা বলি না যে, সকল হিন্দুই সম্পূর্ণভাবে তাহীদের ধর্মের এই-সকল মূল সম্বন্ধে অবগত আছেন। অনেকে—বিশেষতঃ নিম্নবঙ্গে – এই সম্প্রদায় ও প্রণালীসমূহের নাম পর্যন্ত শুনেন নাই ; কিন্তু জ্ঞাতসারেই হউক বা অজ্ঞাতসারেই হউক, পূর্বোক্ত তিন প্রস্থানের উপদেশানুসারে সকল হিন্দুই চলিয়াছেন। অপর দিকে যেখানেই হিন্দীভাযা কথিত হয়, তথাকার অতি নীচজাতি পর্যস্ত নিম্নবঙ্গের অনেক উচ্চতম জাতি অপেক্ষ বৈদান্তিক' ধৰ্ম সম্বন্ধে অধিক অভিজ্ঞ । ইহার কারণ কি ? {. মিথিলাভূমি হইতে নবদ্বীপে আনীত শিরোমণি গদাধর জগদীশ প্রভৃতি মনীষিগণের প্রতিভায় সযত্নে লালিত ও পরিপুষ্ট, কোন কোন বিষয়ে সমগ্র জগতের অন্যান্য সমুদয় প্রণালী অপেক্ষ শ্রেষ্ঠ অপুর্ব সুনিবদ্ধ বাকশিল্পে রচিত তর্কপ্রণালীর বিশ্লেষণস্বরূপ বঙ্গদেশীয় স্তায়শাস্ত্র হিন্দুস্থানের সর্বত্র শ্রদ্ধার সহিত পঠিত হইয়া থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বেদের চর্চায় বঙ্গবাসীর ষত্ব ছিল না, এমন কি, কয়েক বর্ষ মাত্র পুর্বে পতঞ্জলির মহাভাষ্য’ পড়াইতে পারেন, এমন কেহ বঙ্গদেশে ছিলেন না বলিলেই হয় । একবার মাত্র এক মহতী প্রতিভা পাণিনি-ব্যাকরণের ভাষা ; বেদার্থশিক্ষার জন্ত একান্ত আবগুক ।