পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 と 3 স্বামীজীর বাণী ও রচনা বঙ্গীয় যুবকগণ, তোমাদিগকে বিশেষভাবে আহ্বান করিয়া বলিতেছি : ভ্রাতৃগণ । লজ্জার বিষয় হইলেও ইহ। আমরা জানি যে, বৈদেশিকগণ যেসকল প্রকৃত দোষের জন্য হিন্দুজাতিকে নিন্দ করেন, সেগুলির কারণ আমরা । আমরাই ভারতের অন্যান্য জাতির মস্তকে অনেক অনুচিত গালি-বর্ষণের কারণ। কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমরা ইহা বুঝিতে পারিয়াছি, আর তাহার আশীর্বাদে আমরা যে শুধু নিজেদেরই শুদ্ধ করিব, তাহ নয়, সমুদয় ভারতকেই সনাতনধর্মপ্রচারিত অাদশানুসারে জীবন গঠন করিতে সাহায্য করিতে পারিব । প্রথমে এস, ক্রীতদাসের কপালে প্রকৃতি সর্বদাই যে ঈর্ষা-তিলক অঙ্কন করেন, তাহ মুছিয়া ফেলি। কাহারও প্রতি ঈর্ষান্বিত হইও না। সকল শুভকর্মব্রতীকেই সাহায্য করিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকে । ত্ৰিলোকের প্রত্যেক জীবের উদ্দেশে শুভেচ্ছা প্রেরণ কর । এস, আমাদের ধর্মের এক কেন্দ্রীভূত সত্য—যাহা হিন্দু বৌদ্ধ জৈন সকলেরই সাধারণ উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্য, তাহারই ভিত্তিতে দণ্ডায়মান হই । সেই কেন্দ্রীভূত সত্য : এই অজ অনন্ত সর্বব্যাপী অবিনাশী মানবাত্মা, যাহার মহিমা স্বয়ং বেদ প্রকাশ করিতে অক্ষম, র্যাহার মহিমার সমক্ষে অনন্ত সূর্য চন্দ্র তারকা নক্ষত্রপুঞ্জ ও নীহারিকামণ্ডলী বিন্দুতুল্য। প্রত্যেক নরনারী, শুধু তাহাই নয়, উচ্চতম দেবতা হইতে তোমাদের পদতলে ঐ কীট পর্যন্ত সকলেই ঐ আত্মা—হয় উন্নত, নয় অবনত । প্রভেদ –প্রকারগত নয়, পরিমাণগত । আত্মার এই অনন্ত শক্তি জড়ের উপর প্রয়োগ করিলে জাগতিক উন্নতি হয়, চিন্তার উপর প্রয়োগ করিলে মনীষার বিকাশ হয় এবং নিজেরই উপর প্রয়োগ করিলে মানুষ দেবত হইয়া যায়। § প্রথমে এস, আমরা দেবত্ব লাভ করি, পরে অপরকে দেবতা হইতে সাহায্য করিব । নিজে সিদ্ধ হইয় অপরকে সিদ্ধ হইতে সহায়তা কর’—ইহাই আমাদের মূলমন্ত্র হউক। মানুষকে পাপী বলিও না ; তাহাকে বলে, তুমি ব্রহ্ম। যদি বা কেহ শয়তান থাকে, তথাপি ব্রহ্মকেই স্মরণ করা আমাদের কর্তব্য—শয়তানকে নয় । -- ঘর যদি অন্ধকার হয়, তবে সর্বদা ‘অন্ধকার, অন্ধকার’ বলিয়া দুঃখ প্রকাশ করিলে অন্ধকার দূর হইবে না, বরং আলো আনে। জানিয়া রাখো—যাহা কিছু অভাবাত্মক, যাহা কিছু পুর্ববর্তী ভাবগুলিকে ভাঙিয়া ফেলিতেই নিযুক্ত, . যাহা কিছু কেবল দোষদর্শনাত্মক, তাহা চলিঙ্গ যাইবেই যাইবে যাহা কিছু