পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 স্বামীজীর বাণী ও রচনা ঐ-সকল আচার সাহেবদের মতবিরুদ্ধ s' আমাদের কতকগুলি প্রথা দোষাবহ কেন ? —কারণ সাহেবরা এরূপ বলিয়া থাকে ! এরূপ ভাব আমি চাহি না । বরং নিজের যাহা আছে, তাহা লইয়া নিজের শক্তির উপর নির্ভর করিয়া মরিয়া যাও। জগতে যদি কিছু পাপ থাকে, তবে দুর্বলতাই সেই পাপ । সর্বপ্রকার দুর্বলতা ত্যাগ কর –দুর্বলতাই মৃত্যু, দুর্বলতাই পাপ । এই প্রাচীন পন্থাবলম্বী ব্যক্তিগণ মানুষ ছিলেন–র্তাহাদের একটা দৃঢ়তা ছিল ; কিন্তু এই সামঞ্জস্যহীন --ভারসাম্যহীন জীবগণ এখনও কোন নিদিষ্ট ব্যক্তিত্ব লাভ করিতে পারে নাই। তাহাদিগকে কি বলিব—পুরুষ না স্ত্রী, না পশু ? তবে তাহণদের মধ্যেও কয়েকজন আদশ-স্থানীয় ব্যক্তি আছেন । তোমাদের রাজা তাহার একটি দৃষ্টান্ত । সমগ্র ভারতে ইহার ন্যায় নিষ্ঠাবান হিন্দু দেখিতে পাইবে না ; আবার প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সকল বিষয়েই বিশেষ সংবাদ রাখেন, এমন রাজা ভারতে আর বাহির করিতে পারিবে না । ইনি প্রাচ্য-পাশ্চাত্য উভয়েবই সামঞ্জস্য বিধান করিয়াছেন—উভয় জাতির যাহা ভাল, তাহাই ইনি গ্রহণ করিয়াছেন । মন্ত মহারাজ তৎকুত সংহিতায় বলিয়াছেন : শ্রদধান; শুভাং বিদ্যামাদদীতাবরাদপি । অস্ত্যাদপি পরং ধর্মং স্ত্রীরত্বং দুফুলাদপি ॥১ —শ্রদ্ধাপুর্বক নীচ ব্যক্তির নিকট হইতেও উত্তম বিদ্যা গ্রহণ করিবে । অতি নীচ জাতির নিকট হইতেও শ্রেষ্ঠ ধর্ম, অর্থাং মুক্তিমার্গের উপদেশ লইবে । নীচকুল হইতেও বিবাহের জন্য উত্তম স্ত্রী গ্রহণ করিবে । মন্ত মহারাজ ঘাত বলিয়াছেন, তাহা ঠিক কথা। আগে নিজের পায়ের উপর দাড়াও, তারপর সকল জাতির নিকট হইতেই শিক্ষা গ্রহণ কর, যাহা কিছু পারো আপনার করিয়া লও ; যাহা কিছু তোমার কাজে লাগিবে, তাহা গ্রহণ কর । " তবে একটি কথা মনে রাপিও –তোমরা যখন হিন্দু, তখন তোমরা যাহা কিছু শিক্ষা কর না কেন, তাহাই যেন তোমাদের জাতীয় জীবনের মূলমন্ত্রস্বরূপ ধর্মের নিম্নে স্থান গ্রহণ করে। প্রত্যেক ব্যক্তিরই জীবনে এক বিশেষ উদ্দেশ্য আছে । অতীত জন্মের কর্মফলে তাহার জীবনের এই নির্দিষ্ট গতি নিয়মিত হইয়া থাকে । তোমরাও প্রত্যেকে এক বিশেষ ব্রতসাধনের জন্য জন্মগ্রহণ ১ মনুসংহিতা, ২।২৩৮