পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(? R. স্বামীজীর বুাণী ও রচনা উপর স্থাপিত না করে, তবে পঞ্চাশ বৎসরের মধ্যেই উহা ধ্বংসপ্রাপ্ত হইবে। উপনিষদের ধর্মই ইওরোপকে রক্ষা করিবে । g আমাদের দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়, বিভিন্ন শাস্ত্র ও বিভিন্ন দর্শনের মধ্যে যতই মতভেদ থাকুক—এই-সকল বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এমন একটি সাধারণ ভিত্তি আছে, যাহা দ্বারা সমগ্র জগতের ভাবস্রোত পরিবর্তিত হইতে পারে। সেই সাধারণ ভিত্তি –জীবাত্মার সর্বশক্তিমত্তায় বিশ্বাস। ভারতের সর্বত্র হিন্দু জৈন বৌদ্ধ—সকলেই স্বীকার করিয়া থাকেন, আত্মা সর্বশক্তির আধার। আর তোমরা বেশ জানো, ভারতে এমন কোন সম্প্রদায় নাই, যাহারা বিশ্বাস করে যে, শক্তি পবিত্রতা বা পূর্ণতা বাহির হইতে লাভ করিতে হয়। এগুলি আমাদের জন্মগত অধিকার—আমাদের স্বভাবসিদ্ধ । তোমার প্রকৃত স্বরূপ অপবিত্রতার আবরণে আবৃত রহিয়াছে। প্রকৃত ‘তুমি কিন্তু অনাদিকাল হইতেই পূর্ণ অচল অটল স্বমেরুবং " আত্মসংযমের জন্য বাহিরের সাহায্য কিছুমাত্র আবশ্বক নাই। অনাদিকাল হইতেই তুমি আত্মনিয়ন্ত্রিত, শুধু জানা এবং মা জানাতেই অবস্থার তারতম্য, এই জন্য শাস্ত্রে অবিদ্যাকেই সর্বপ্রকার অনিষ্টের মূল বলিয়া নির্দেশ করা হইয়াছে। ভগবান ও মানুযে, সাধু ও পাপীতে প্রভেদ কিসে?—কেবল অজ্ঞানে। অজ্ঞানেই প্রভেদ হয়। সর্বোচ্চ মানুষ এবং তোমার পদতলে অতি কষ্টে বিচরণকারী ঐ ক্ষুদ্র কীটের মধ্যে প্রভেদ কিসে?—অজ্ঞানই এই প্রভেদ করিয়াছে। কারণ অতি কষ্টে বিচরণশীল ঐ ক্ষুদ্র কীটের মধ্যেও অনন্ত শক্তি, জ্ঞান ও পবিত্রতা—এমন কি সাক্ষাং অনন্ত ব্ৰহ্ম রহিয়াছেন । এখন উহ! অব্যক্তভাবে রহিয়াছে—উহাকে ব্যক্ত করিতে হইব। ভারত জগৎকে এই এক মহাসত্য শিখাইবে, কারণ ইহা আর কোথাও নাই । ইহাই আধ্যাত্মিকত! - ইহাই আত্মবিজ্ঞান । কিসের জোরে মাহুষ উঠিয়া দাড়ায় ও কাজ করে?—শক্তির জোরে ; এই বল-বীৰ্যই ধাৰ্মিকতা, দুর্বলতাই পাপ । যদি উপনিষদে এমন কোন শব্দ থাকে, যাহা বজ্রবেগে অজ্ঞানরাশির উপর পতিত হইয়া উহাকে একেবারে ছিন্ন-ভিন্ন করিয়া ফেলিতে পারে, তবে তাহা—‘অভী:’ । যদি জগংকে কোন ধর্ম শিখাইতে হয়, তবে তাহা এই অভীঃ । কি ঐহিক, কি আধ্যাত্মিক সকল বিষয়েই ‘অভী?—এই মূলমন্ত্র অবলম্বন করিতে হইবে। কারণ ভয়ই পাপ ও অধঃপতনের নিশ্চিত কারণ। ভয় হইতেই মৃত্যু, ভয় হইতেই সর্বপ্রকার অবনতি