পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাদুরা অভিনন্দনের উত্তর やっ> করি, পাশ্চাত্যদিগের সংঘবদ্ধ কার্যপ্রণালী ও বাহ সভ্যতার ভাব আমাদের দেশে প্রবেশ করিয়া সমগ্র দেশকে ছাইয়। ফেলিবার উপক্রম করিতেছে, সেইরূপ ভারতীয় ধর্ম ও দর্শন পাশ্চাত্য দেশকে প্লাবিত করিবার উপক্রম করিতেছে। কেহই ইহার গতিরোধে সমর্থ নহে । আমরাও পাশ্চাত্য জড়বাদপ্রধান সভ্যতার প্রভাব সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করিতে অসমর্থ। সম্ভবতঃ কিছু কিছু বাহ সভ্যতা আমাদের পক্ষে কল্যাণকর, পাশ্চাত্যদেশের পক্ষে আবার সম্ভবতঃ একটু আধ্যাত্মিকতা আবশ্যক । তাহা হইলেই উভয়ের সামঞ্জস্য রক্ষিত হইবে ; আমাদিগকে যে পাশ্চাত্যদেশ হইতে সব কিছু শিখিতে হইবে অথবা পাশ্চাত্যকে আমাদের নিকট সব কিছু শিখিতে হইবে, তাহা নহে। সমগ্র পৃথিবী যুগযুগান্তর ধরিয়া যে আদর্শ-জগতের কল্পনা করিয়া আসিতেছে, যাহাতে শীঘ্র তাহা রূপায়িত হয়, যাহাতে সকল জাতির মধ্যে একটা সামঞ্জস্য স্থাপিত হয়, তদুদেশে প্রত্যেকেরই যতটুকু সাধ্য ততটুকু ভবিষ্যং বংশধরদিগকে দেওয়া উচিত । এই আদশ-জগতের আবির্ভাব কখনও হইবে কি না, তাহ জানি না ; এই সামাজিক সম্পূর্ণত কখনও আসিবে কি না, এ-সম্বন্ধে আমার নিজেরই সন্দেহ আছে ; কিন্তু জগতের এই আদর্শ-অবস্থা কখন আস্থক বা না আমুক, এই অবস্থা আনিবার জন্য আমাদের প্রত্যেককে চেষ্টা করিতে হইবে । মনে করিতে হইবে, কালই জগতের এই অবস্থা আসিবে, আর আমার – কেবল আমার কাজের উপরই- ইহা নির্ভর করিতেছে । আমাদের প্রত্যেককেই বিশ্বাস করিতে হইবে যে, জগতের অপর সকলে নিজ নিজ কাজ শেষ করিয়া বসিয়া আছে—একমাত্র আমাৱই কেবল কাজ করার বাকি আছে ; আর আমি যদি নিজের কাজ সম্পন্ন করি, তবেই জগতের সম্পূর্ণতা সাধিত হইবে । আমাদের নিজেদের এই দায়িত্বভার গ্রহণ করিতে হইবে । 拿 যাহা হউক, দেখা যাইতেছে—ভারতে ধর্মের এক প্রবল পুনরুখান হইয়াছে। ইহাতে খুব আনন্দের কারণ আছে বটে, কিন্তু আবার বিপদেরও আশঙ্কা আছে। কারণ ধর্মের পুনরুত্থানের সঙ্গে সঙ্গে ভয়ানক গোড়ামিও আসিয়া থাকে। কখন কখন লোকে এত বাড়াবাড়ি করিয়া থাকে যে, অনেক সময় যাহাদের চেষ্ট্ৰীয় এই পুনরভুখান সাধিত হয়, কিছুদূর অগ্রসর হইলে তাহারাও উহ নিয়ন্ত্ৰিত করিতে পারেন না। অতএব পূর্ব হইতেই সাবধান হওয়া ভাল। আমাদের মধ্যপথ অবলম্বন করিতে হইবে । এক দিকে কুসংস্কারপুর্ণ প্রাচীন