পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুম্ভকোণ বক্তৃতা స్క్రిఫి প্রাচীন পুর্বপুরুষগণের তুলনায় যাহারা সেদিনের শিশুমাত্র, সেই-সকল জাতির নিকট স্বদ্যু অথচ স্পষ্ট ভাষায় বলিয়া থাকে বালক ! তুমি ইন্দ্ৰিয়ের দাস , কিন্তু ইন্দ্রিয়ের ভোগ অস্থায়ী-বিনাশই উহার পরিণাম । এই তিনদিনের ক্ষণস্থায়ী বিলাসের ফল—সর্বনাশ । অতএব ইন্দ্রিয়সুখের বাসনা ত্যাগ কর—ইহাই ধর্মলাভের উপায়। ত্যাগই আমাদের চরম লক্ষ্য, মুক্তির সোপান—ভোগ আমাদের লক্ষ্য নহে । এই জন্য আমাদের ধর্মই একমাত্র সত্যধর্ম। বিস্ময়ের বিষয়, এক জাতির পর আর এক জাতি সংসার-রঙ্গভূমিতে অবতীর্ণ হইয়া কয়েক মুহূর্ত পরাক্রমের সহিত নিজ নিজ অংশ অভিনয় করিয়াছে, কিন্তু পরমুহূর্তেই তাহাদের মৃত্যু ঘটিয়াঁছে ! কালসমুদ্রে তাহার একটি ক্ষুদ্র তরঙ্গও স্বষ্টি করিতে পারে নাই—নিজেদের কিছু চিহ্ন পর্যন্ত রাথিয়া যাইতে পারে নাই । আমরা কিন্তু অনস্তকাল কাক-ভূশওঁীর মতো বাচিয়া আছি—আমাদের যে কখন মৃত্যু হইবে, তাহার লক্ষণও দেখা যাইতেছে না । আজকাল লোকে ‘যোগ্যতমের উদ্বর্তন’ (Survival of the fittest)-রূপ নূতন মতবাদ লইয়া অনেক কথা বলিয়া থাকে। তাহারা মনে করে—যাহার গায়ের জোর যত বেশী, সেই তত অধিক দিন জীবিত থাকিবে । যদি তাহাই সত্য হইত, তবে প্রাচীনকালের যে-সকল জাতি কেবল অন্যান্য জাতির সহিত যুদ্ধ-বিগ্রহে কাটাইয়াছে, তাহারাই মহাগৌরবের সহিত আজও জীবিত থাকিত এবং এই দুর্বল হিন্দুজাতি, যাহারা কখনও অপর একটি জাতিকে জয় করে নাই, তাহারাই এতদিন বিনষ্ট হইয়া যাইত। জনৈক ইংরেজ মহিলা আমাকে এক সময় বলেন, হিন্দুরা কি করিয়াছে ? তাহারা কোন একটা জাতিকেও জয় করিতে পারে নাই ! পরস্তু এই জাতি এখনও ত্রিশকোটি প্রাণী লইয়া সদৰ্পে জীবিত রহিয়াছে! আর ইহা সত্য নহে যে, উহার সমুদয় শক্তি নিঃশেষিত হইয়াছে; ইহাও কখন সত্য নহে যে, এই জাতির শরীর পুষ্টির অভাবে ক্ষয় পাইতেছে। এই জাতির এখনও যথেষ্ট জীবনীশক্তি রহিয়াছে। যখনই উপযুক্ত সময় আসে, যখনই প্রয়োজন হয়, তখনই এই জীবনীশক্তি মহাবন্তার মতো প্রবাহিত হইয়া থাকে । আর যেন অতি প্রাচীনকাল হইতে সমগ্র পৃথিবীকে এক মহাসমস্ত সমাধানের জন্য আহবান করিয়াছি। পাশ্চাত্যদেশে সকলে চেষ্টা করিতেছে । কিরূপে তাহারা জগতের সর্বাপেক্ষ অধিক দ্রব্যসামগ্রীর অধিকারী হইবে ;