পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুম্ভকোণম বক্তৃত৷ b" ভাল লাগে, তবে তাহা এই দুইটি মহাবলপ্রদ শ্লোক—শ্ৰীকৃষ্ণের উপদেশের সারস্বরূপ : - সমং সর্বেষু ভূতেষু তিষ্ঠন্তং পরমেশ্বরম্। বিনশ্বাৎস্ববিনশ্বাস্তং য: পশ্যতি স পশুতি ॥ সমং পশুন হি সর্বত্র সমবস্থিতমীশ্বরম। ন হিনস্তাত্মনাত্মানং ততো যাতি পরাং গতিম ॥১ —বিনাশশীল সর্বভূতের মধ্যে অবিনাশী পরমেশ্বরকে ঘিনি সমভাবে অবস্থিত দেখেন, তিনিই যথার্থ দৰ্শন করেন । কারণ, ঈশ্বরকে সর্বত্র সমভাবে অবস্থিত দেখিয়া তিনি নিজে নিজেকে হিংসা করেন না, মুতরাং পরমগতি প্রাপ্ত হন । সুতরাং দেখা যাইতেছে, বেদাস্ত-প্রচারের দ্বারা এদেশে ও অন্যান্য দেশে যথেষ্ট লোকহিতকর কার্যের প্রবর্তন করা যাইতে পারে। এদেশে এবং অন্যত্র সমগ্র মন্ত্যজাতির দুঃখমোচন ও উন্নতিবিধানের জন্য পরমাত্মার সর্বব্যাপিত্ব ও সর্বত্র সমভাবে অবস্থিতিরূপ অপুর্ব তত্ত্বদ্বয় প্রচার করিতে হুইবে । যেখানেই অশুভ, যেখানেই অজ্ঞান দেখা যায়—আমি আমার অভিজ্ঞতা হইতে বুঝিয়াছি এবং আমাদের শাস্ত্রও সে-কথা বলিয়া থাকেন যে, ভেদবুদ্ধি হইতেই সমুদয় অশুভ আসে এবং অভেদবুদ্ধি হইলে, সকল বিভিন্নতার মধ্যে বাস্তবিক এক সত্তা রহিয়াছে—ইহা ৰিশ্বাস করিলে সর্ববিধ কল্যাণ হইয়া থাকে। ইহাই বেদান্তের মহোচ্চ আদর্শ। তবে সকল বিষয়েই, শুধু আদর্শে বিশ্বাস করা এক কথা, আর দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যেক খুটিনাটি বিষয়ে সেই আদর্শ অনুযায়ী চলা আর এক কথা । একটি উচ্চ আদর্শ দেখাইয়া দেওয়া অতি উত্তম, কিন্তু ঐ আদর্শে পৌছ্বিার কার্যকর উপায় কই ? এখানে স্বভাবতঃ সেই কঠিন প্রশ্নটি আসিয়া উপস্থিত হয়, যাহা অসজ কয়েক শতাব্দী ধরিয়া সর্বসাধারণের মনে বিশেষভাবে জাগিতেছে ; সেই প্রশ্ন আর কিছুই নহে—জাতিভেদ ও সমাজ-সংস্কার-বিষয়ক সেই পুরাতন সমস্যা । আমি সমাগত শ্রোতৃবর্গের নিকট খোলাখুলি বলিতে চাই যে, আমি একজন জাতিভেদলোপকারী বা সমাজসংস্কারক মাত্র নহি । জাতিভেদ বা ১ গীতা, ১৩২৪-২৯