পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՊԿ) স্বামীজীর বাণী ও রচনা গুলিই তাহাকে মন কর্ম হইতে ফিরাইয়া আনিবে ; সে তখন তাহার সৎ সংস্কারগুলি দ্বারা সম্পূর্ণরূপে প্রভাবিত হয়। যখন এইরূপ হয়, তখনই সেই ব্যক্তির চরিত্র গঠিত হইয়াছে বলা যায়। যেমন কুর্ম তাহার পা ও মাথা খোলার ভিতরে গুটাইয়। রাখে,— তাহাকে মারিয়া ফেলিতে পারো, খণ্ড খণ্ড করিয়া ফেলিতে পারে, তথাপি পা ও মাথা বাহিরে আসিবে না, তেমনি যে ব্যক্তির ইন্দ্রিয় ও প্রবৃত্তিগুলি সংযত হইয়াছে, তাহার চরিত্রও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। সে তাহার অস্তরিক্রিয়গুলি সংযত করিয়াছে, তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কিছুই সেগুলিকে বহির্মুখী করিতে পারে না। এরূপ নিরস্তর সচ্চিস্তার প্রতিক্রিয়। স্বার। শুভ সংস্কারগুলি তাহার মনের উপরিভাগে সর্বদা আবর্তিত হওয়ায় সৎকর্ম করিবার প্রবণতা প্রবল হয় ; তাহার ফল এই হয় যে, আমরা ইন্দ্রিয়গুলি ( জ্ঞানেন্দ্রিয়ের যন্ত্র ও স্বায়ুকেন্দ্র ) জয় করিতে সমর্থ হই । এভাবেই চরিত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, তখনই মানুষ সত্য লাভ করিতে পারে। এরূপ লোকই চিরকালের জন্য নিরাপদ ; তাহার দ্বারা কোন অন্তায় অশুভ কার্য সম্ভব হয় না। তাহাকে যেরূপ সঙ্গেই রাখে। না কেন, তাহার কোন বিপদের সম্ভাবনা নাই। এই সংপ্রবৃত্তি-সম্পন্ন হওয়া অপেক্ষা আরও এক উচ্চতর অবস্থা আছে—মুমুক্ষুত্ব । তোমাদের স্মরণ রাখা উচিত যে, সকল যোগের লক্ষ্য—আত্মার মুক্তি এবং প্রত্যেক যোগই সমভাবে একই লক্ষ্যে লইয়া যায়। বুদ্ধ প্রধানতঃ ধ্যানের দ্বারা, খ্ৰীষ্ট প্রার্থনা দ্বারা যে-অবস্থা লাভ করিয়াছিলেন, মানুষ কেবল কর্মের দ্বারাই সেই অবস্থা লাভ করিতে পারে। বুদ্ধ ছিলেন কর্মপরায়ণ জ্ঞানী, আর খ্ৰীষ্ট ছিলেন ভক্ত ; কিন্তু উভয়ে একই লক্ষ্যে উপনীত হইয়াছিলেন। এটুকুই বুঝা কঠিন। মুক্তির অর্থ সম্পূর্ণ স্বাধীনতা—শুভ বন্ধন হইতে যেমন, অশুভ বন্ধন হইতেও তেমনি মুক্তি। সোনার শিকলও শিকল, লোহার শিকলও শিকল। আমার আঙুলে একটি কাটা ফুটিয়াছে, আর একটি কাটা দ্বারা ঐ কাটাটি তুলিয়া ফেলিলাম, তোলা হইয়া গেলে দুটি কাটাই ফেলিয়া দিলাম। দ্বিতীয় কাটাটি রাখিবার দরকার নাই, কারণ দুটিই তে৷ কাটা । এইরূপ অশুভ সংস্কারগুলি শুভ সংস্কার দ্বারা ব্যাহত করিতে হইবে। মনের মন্দ সংস্কারগুলি দূরীভূত করিয়া সেখানে ভাল সংস্কারের তরঙ্গ প্রবাহিত করিতে