পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরোপকারে নিজেরই উপকার 3)) ইহা অপেক্ষা অধিকতর আশ্চর্ষ আর কি হইতে পারে? এক ব্যক্তি আর এক ব্যক্তিকে মূর্খ বলিল—অমনি সে উঠিয়া মুষ্টি বদ্ধ করিয়া তাহার নাকে ঘুষি মারিল। দেখ—শবের কি শক্তি! ঐ এক নারী দুঃখে কষ্টে কাদিতেছে ; আর এক নারী আসিয়া তাহাকে দুই-চারিটি মিষ্টকথা শুনাইলেন। অমনি সেই রোদনপরায়ণ নাবীর বক্রদেহ সঙ্গে সঙ্গে সোজা হইল, তাহার শোকদুঃখ চলিয়া গেল, তাহার মুখে হালি দেখা দিল। দেখ, শব্দের কি শক্তি ! উচ্চ দর্শনে যেমন, সাধারণ জীবনেও তেমনি শব্দের প্রচণ্ড শক্তি । এ-সম্বন্ধে বিশেষ চিস্তা ও অনুসন্ধান না করিয়াও আমরা দিবারাত্র এই শক্তি লইয়া নাড়াচাড়া করিতেছি । এই শক্তির প্রকৃতি অবগত হওয়া এবং যথাযথভাবে উহার ব্যবহার করা কর্মযোগের অঙ্গবিশেষ । অপরের প্রতি আমাদের কর্তব্যের অর্থ—অপরকে সাহায্য করা, জগতের উপকার করা। কেন আমরা জগতের উপকার করিব ? আপাততঃ বোধ হয় যে, আমরা জগৎকে সাহায্য করিতেছি, বাস্তবিক কিন্তু আমরা নিজেদেরই সাহায্য করিতেছি। আমাদের সর্বদাই জগতের উপকার করিবার চেষ্টা করা আবশ্বক, ইহাই যেন আমাদের কর্মপ্রবৃত্তির শ্রেষ্ঠ প্রেরণা হয় ; কিন্তু যদি আমরা বিশেষ বিচার করিয়া দেখি, তবে দেখিব, আমাদের নিকট হইতে এই জগতের কোন সাহায্যেরই প্রয়োজন নাই। তুমি আমি আসিয়া উপকার করিব বলিয়৷ এই জগৎ স্বস্ট হয় নাই। আমি একবার এক ( খ্ৰীষ্টায় ) ধর্মোপদেশে পড়িয়াছিলাম, এই স্বন্দর জগৎ অতি মঙ্গলময়, কারণ এখানে আমরা অপরকে সাহায্য করিবার সময় ও স্থবি ।’ বাহ্যতঃ ইহা অতি সুন্দর ভাব বটে, কিন্তু জগতে_আমাদের সাহায্য প্রয়োজন—এইরূপ বলা কি_ঈশ্বরনিন্দ৷ নয়? অবশু জগতে যে যথেষ্ট দুঃখ আছে, তাহ আমরা অস্বীকার করিতে পারি না। সুতরাং আমরা যত কাজ করি, তাহার মধ্যে অপরকে সাহায্য করাই সর্বাপেক্ষা ভাল কাজ। যদিও আমরা শেষ পর্যন্ত দেখিব—পরকে সাহায্য করা নিজেরই উপকার করা। বাল্যকালে আমার কতকগুলি সাদা ইদুর ছিল। সেগুলি থাকিত একটি ছোট বাক্সে, তাহাতে ছোট ছোট চাকা ছিল। ইদুরগুলি যেই চাকার উপর দিয়া পার হইতে চেষ্টা করিত, অমনি চাকাগুলি ক্রমাগত ঘুরিত, ইদুরগুলি আর অগ্রসর হইতে পারিত মা। এই জগং এবং উহাকে সাহায্য করাও সেইরূপ । তবে এইটুকু উপকার