পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনাসক্তিই পূর্ণ আত্মত্যাগ > S > করা যায় না। আমরা অনস্তকাল কাজ করিয়া যাইতে পারি, কিন্তু এই জটিল সংসার-রূপ গোলকধাঁধা হইতে বাহির হইবার পথ পাওয়া যাইবে না ; তুমি ক্রমাগত কাজ করিয়া যাইতে পারে, কর্মফলে শুভ ও অশুভের অবগুম্ভাবী মিশ্রণের অন্ত নাই । দ্বিতীয় বিবেচ্য বিষয় এই : কর্মের উদ্দেশ্য কি ? আমরা দেখিতে পাই, প্রত্যেক দেশের অধিকাংশ লোকের এই বিশ্বাস যে, এক সময়ে এই জগৎ পূর্ণতা লাভ করিবে ; তখন ব্যাধি মৃত্যু দুঃখ বা দুনীতি থাকিবে মা । ইহ খুব ভাল ভাব, অজ্ঞ ব্যক্তিদের উন্নত ও উৎসাহিত করিতে ইহা খুবই প্রেরণা জোগায়, কিন্তু যদি আমরা এক মুহূর্ত চিন্তা করি, তাহা হইলে স্পষ্টই দেখিব, এরূপ কখনও হইতে পারে না। কিরূপে ইহা হইতে পারে ? —ভাল-মন্দ যে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। মন্দকে ছাড়িয়া ভাল কিরূপে পাওয়া যায় ? পূর্ণতার অর্থ কি ? ‘পরিপূর্ণ জীবন একটি স্ব-বিরোধী বাক্য। প্রত্যেকটি বাহিরের বস্তুর সহিত আমাদের নিয়ত সংগ্রামের অবস্থাই জীবন। প্রতি মুহূর্তে আমরা বহিঃপ্রকৃতির সহিত সংগ্রাম করিতেছি, যদি আমরা ইহাতে পরাস্ত হই, আমাদের জীবন ধ্বংস হইয়। যাইবে । আহার ও বাযুর জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা—এই তো জীবন । আহার বা বায়ু না পাইলেই আমাদের মৃত্যু। জীবন একটা সহজ ও স্বচ্ছন্দ ব্যাপার নয়, উহী রীতিমত একটি জটিল ব্যাপার। এই বহির্জগৎ ও অন্তজগতের মধ্যে যে জটিল সংগ্রাম, তাহাকেই আমরা জীবন বলি। অতএব স্পষ্টই দেখা যাইতেছে—এই সংগ্রাম শেষ হইলে জীবন ও শেষ হইবে । আদর্শ মুখ বলিতে বুঝায়—এই সংগ্রামের সমাপ্তি। কিন্তু তাহা হইলে জীবনও শেষ হইবে, কারণ সংগ্রাম তখনই শেষ হইতে পারে যখন জীবনের শেষ। এই অবস্থার সহস্র ভাগের এক ভাগ উপস্থিত হইবার পূর্বেই এ পৃথিবী শীতল হইয়া যাইবে, তখন আমরা থাকিব না। অতএব অন্যত্র ইয হউক, এই পৃথিবীতে এই সত্যযুগ—এই আদর্শ-যুগ—কখনই আসিতে পারে ন} । আমরা পূর্বেই দেখিয়াছি, জগতের উপকার করিতে গিয়া প্রকৃতপক্ষে Niমরা নিজেদেরই উপকার করিয়া থাকি। অপরের জন্তু আমরা যে কার্য করি, তাহার মুখ্য ফল—আমাদের চিত্তশুদ্ধি। সর্বদা অপরের ফঁল্যাণ