পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুক্তি . »ቖ @ আমাদের জ্ঞাত ক্ষুদ্র জগতের বাহিরে অসংখ্য প্রকার স্থখ-দুঃখ, অসংখ্য প্রাণী, অসংখ্য বিধি, অসংখ্য প্রকার উন্নতি এবং অসংখ্য প্রকার কার্য-কারণ-সম্বন্ধ থাকিতে পারে ; কিন্তু এ-সবই আমাদের অনস্ত প্রকৃতির এক অংশমাত্র। মুক্তি লাভ করিতে হইলে এই জগতের সীমা অতিক্রম করিয়া যাইতে হইবে ; এখানে মুক্তির সন্ধান পাওয়া যাইতে পারে না। সম্পূর্ণ সাম্যাবস্থা বা খ্ৰীষ্টানরা যাহাকে ‘বুদ্ধির অতীত শাস্তি’ বলিয়া থাকেন, তাহ। এই জগতে পাওয়া যাইতে পারে নী—স্বর্গেও নয়, অথবা এমন কোন স্থানেও নয়, যেখানে আমাদের চিন্তাশক্তি ও মন যাইতে পারে, যেখানে ইন্দ্ৰিয়গণ আহুভব করিতে পারে, অথবা কল্পনা-শক্তি যাহা কল্পনা করিতে পারে-~এরূপ কোন স্থানেই সেই যুক্তি পাওয়া যাইতে পারে না, কারণ এ-সকল স্থান অবশুই আমাদের জগতের অন্তর্গত হইবে, এবং সেই জগৎ দেশ-কাল-নিমিত্ত দ্বারা সীমাবদ্ধ। এই পৃথিবী অপেক্ষা সূক্ষ্মতর স্থান থাকিতে পারে, যেখানে ভোগ তীব্রতর, কিন্তু সে-সকল স্থানও জগতের অন্তর্গত, সুতরাং নিয়মের বন্ধনের ভিতর ; অতএব আমাদিগকে এ-সকলের বাহিরে যাইতে হইবে, এবং যেখানে এই ক্ষুদ্র জগতের শেষ, সেখানেই প্রকৃত ধর্মের আরম্ভ। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আনন্দ, বিষাদ ও বস্তুবিষয়ক জ্ঞান—সবই সেখানে শেষ হইয়া যায় এবং প্রকৃত সত্য আরম্ভ হয় । যতদিন না আমরা জীবনের জন্য এই তৃষ্ণ বিসর্জন দিতে পারি, যতদিন না এই ক্ষণস্থায়ী সত্তার প্রতি প্রবল আসক্তি ত্যাগ করিতে পারি, ততদিন জগতের অতীত সেই অনন্ত মুক্তির এটুকু আভাসও পাইবার আশ। আমাদের নাই। অতএব ইহা যুক্তিসঙ্গত যে, মহন্ত-জাতির উচ্চাকাঙ্ক্ষার চরম লক্ষ্য ‘মুক্তি’ লাভ করিবার একটিমাত্র উপায় আছে, সে উপায়—এই ক্ষত্র জীবন, এই ক্ষুদ্র জগং, এই পৃথিবী, এই স্বর্গ, এই শরীর এবং যাহা কিছু সীমাবদ্ধ—সব ত্যাগ কর। যদি আমরা ইন্দ্রিয় ও মনের দ্বারা সীমাবদ্ধ এই শত্র জগং ত্যাগ করিতে পারি, তবে আমরা এখনই মুক্ত হইব । বন্ধন হইতে শক্ত হওয়ার একমাত্র উপায়—সমুদয় নিয়মের বাহিরে যাওয়া, কার্য-কারণ"থলের বাহিরে যাওয়া ; আর যেখানেই এই জগৎ আছে, সেখানেই কার্যকারণ-শৃঙ্খল বর্তমান ) কিন্তু এই জগতের প্রতি আসক্তি ত্যাগ করা বড় কঠিন ব্যাপার। অতি *ল লোকেই এই আসক্তি ত্যাগ করিতে পারে। আমাদের শাস্ত্রে আসক্তি