পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সরল রাজযোগ 33 (৪) কায়মনোবাক্যে সত্যনিষ্ঠ হওয়া। (৫) কায়মনোবাক্যে বৃথা দান গ্রহণ না করা (অপ্রতিগ্রহ )। _দ্বিতীয়–নিয়ম। শরীরের ষত্ব, স্নান, পরিমিত আহার ইত্যাদি । তৃতীয়—আসন । মেরুদণ্ডের উপর জোর না দিয়ে কটিদেশ, স্কন্ধ ও মাথ৷ ঋজুভাবে রাখতে হবে। চতুর্থ—প্রাণায়াম। প্রাণবায়ুকে আয়ত্ত করবার জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসের সংযম। পঞ্চম—প্ৰত্যাহার। মনকে বহির্মুখ হ’তে না দিয়ে অন্তর্মুখ ক’রে কোন জিনিস বোঝবার জন্য বারংবার অালোচনা । যষ্ঠ—ধারণ । কোন এক বিষয়ে মনকে একাগ্র করা। সপ্তম—ধ্যান। কোন এক বিষয়ে মনের অবিচ্ছিন্ন চিন্ত । অষ্টম—সমাধি। জ্ঞানের আলোক লাভ করাই আমাদের সকল সাধনার जचका । যম ও নিয়ম সারা জীবন ধরে আমাদের অভ্যাস করতে হবে । জোক যেমন একটা ঘাস দৃঢ়ভাবে না ধরা পুর্যন্ত আর একটা ছেড়ে দেয় না, তেমনি একটি সাধন ছাড়বার আগে অপরটি বেশ ক’রে বোঝা এবং অভ্যাস করা চাই । অাজকের আলোচ্য বিষয়—প্রাণায়াম অর্থাৎ প্রাণের নিয়মন । রাজযোগের সাধনায় প্রাণবায়ু চিত্তভূমির মধ্য দিয়ে আমাদের আধ্যাত্মিক রাজ্যে নিয়ে যায়। প্রাণবায়ু বা স্বাসপ্রশ্বাস হচ্ছে সমগ্র হেন্ত্রের নিয়ামক মূল চক্র (Fly-wheel)। প্রাণ প্রথমে ফুসফুসে, ফুলফুল থেকে হৃদয়ে, হৃদয় থেকে রক্ত-প্রবাহে, সেখান থেকে মস্তিষ্কে, সব শেষে মস্তিষ্ক থেকে মনে কাজ করে। ইচ্ছা-শক্তি বাহ সংবেদন উৎপন্ন করতে পারে, বাহ সংবেদনও ইচ্ছা-শক্তি জাগিয়ে তুলতে পারে। আমাদের ইচ্ছা দুর্বল ; আমরা এতই বদ্ধ যে, ইচ্ছার যথার্থ শক্তিকে আমরা উপলব্ধি করি না। আমাদের অধিকাংশ কার্যের প্রেরণা আসে বাইরে থেকে ; বহিঃপ্রকৃতি আমাদের খ স্বরের সাম্যভাব নষ্ট করে, কিন্তু আমরা তার সাম্যভাব নষ্ট করতে পারি (যেটা আমাদের পারা উচিত )। কিন্তু এ-সবই স্থল, প্রকৃতপক্ষে, মাপকতর শক্তি রয়েছে আমাদের ভেতরে।